জেলা

‘কথা দিয়ে কথা রেখেছি’, ময়নাগুড়ির টাউন ক্লাবে জনসভা থেকে কেন্দ্রকে নিশানা অভিষেকের

আজ ময়নাগুড়ি টাউন ক্লাবে জনসভা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের একবার সেখান থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। এদিন তিনি বলেন, বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চক্রান্ত চলছে। বাংলার সব টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘২০১৯ সালে বিজেপিকে ভোট দিলেন। জিতেই ভাতা মারার চেষ্টা। ২১ এ বিধায়ক জেতালেন। আপনাদের সমর্থন নিয়ে আপনাদেরই ভাতে মারার চেষ্টা। যখন এসেছি যা চেয়েছি খালি হাতে আমায় ফেরাননি। ধূপগুড়িও জিতিয়েছেন। কথা দিয়ে কথা রেখেছি। আমি এবার আপনাদের অনুরোধ করব আগামিদিন নিজের অধিকার সামনে রেখে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ২০১৯ সালে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। জেতার পরদিন থেকে কীভাবে বাংলার মানুষকে ভাতে মারা যায় ভাবছে। ২০২১-এও এসব জায়গায় বিজেপিকে জিতিয়েছিলেন। আপনাদের সমর্থন নিয়ে এরা বিধায়ক, সাংসদ হয়েছেন। আপনাদের সমর্থন নিয়ে আপনাদের ভাতে মারার চেষ্টা করেছে।’ কেন্দ্রে কার্যকলাপের প্রসঙ্গ তুলে এদিন তিনি বলেন, ‘একবার বুকে রাখ রেখে বলুন তো নিজের অধিকার সামনে রেখে ২০১৯ সালে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন? সব ভোট দিয়েছিলেন ধর্ম আর রামমন্দির। ৩ হাজার কোটি খরচ করে রাম মন্দির তো হয়েছে। কিন্তু আপনার বাড়ির ছাদের টাকা আপনি পাননি কারণ আপনি আপনার অধিকারকে সামনে রেখে ভোট দেননি। আজ কেন একথা বলছি? গণতন্ত্রে কোনও নেতা শেষ কথা বলে না। বিরোধী দলনেতা বলছেন বাংলার মানুষের টাকা বন্ধ করে রেখেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলছেন, একটা ফোন করবেন টাকা চলে আসবে। বিরোধী দলনেতা বলছেন, একটা টাকাও যাতে না পায়। সব টাকা বন্ধ করে দেব। এই আমরা যারা মঞ্চে বসে আছি, আমাদের মূল্য হচ্ছে এত বড় একটা গোল্লা। শূন্য। মানুষ চেয়েছে বলে কেউ বিধায়ক, কেউ সাংসদ। মানুষ চেয়েছে বলে কেউ মন্ত্রী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, কেউ প্রধান, কেউ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কেউ দেশের প্রধানমন্ত্রী। মানুষ যেদিন চাইবে না কোনও নেতার ক্ষমতা নেই টাকা পয়সা ইডি সিবিআই খরচ করে মানুষের টাকা আটকে রাখবে।’ ১০০ দিনের টাকার প্রসঙ্গ তুলে এদিন তিনি বলেন, ‘মানুষ চাইলে এদের দম্ভ ভাঙতে ৫ মিনিট লাগবে না। গণতন্ত্রে শেষ কথা মানুষ বলে। কোনও নেতা বলে না। ২০২১ সালে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সামনে রেখে ভোট দিয়েছিলেন, হয়েছে। ২০২৩-এর পঞ্চায়েতে আমি সর্বত্র গিয়ে অনুরোধ করেছিলাম ১০০ দিনের টাকা যাতে পান সেই অধিকার সামনে রেখে দিন। ভোট দিয়েছেন। ১০০ দিনের টাকা পেয়েছেন কি না বলুন? ২০২৪-এ নিজের অধিকার সামনে রেখে ভোট দিন। তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস, নির্দল যাকে খুশি দিন। নিজের অধিকারটা বুঝে নিতে দিন।’ তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চক্রান্ত করেছে। আর তাই বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এই রাজ্যের বিজেপি নেতারাই কেন্দ্রকে টাকা আটকে রাখতে বলেছেন।” এরপর নাম করে বিজেপির তিন সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অভিষেক। কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিক, আলিপুরদুয়ারের জন বার্লা এবং জলপাইগুড়়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ের নাম উল্লেখ করে অভিষেক দাবি করেন, রাজ্য়ের অন্য অংশের মতো এই তিনটি জায়গাতেও বহু মানুষ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার। তাঁদের জন্য এই তিন সাংসদ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঁচ বছরে একটিও চিঠি লেখেননি। এমনকী কোনও সভাও করেননি। এরপরই অভিষেকের দাবি, আগামিদিনে নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে হবে। অভিষেকের কথায়, “আপনাদের যাঁকে ইচ্ছা তাঁকে ভোট দিন। কিন্ত অধিকার বুঝে নেওয়ার দাবি মাথায় রেখেই ভোট দেবেন। গতবার আপনারা রাম মন্দিরের কথা মাথায় রেখে ভোট দিয়েছিলেন। এবার দুধের দাম লেবুর দাম ২০১৪ সালের কী ছিল সেটা মাথায় রেখে ভোট দেবেন। “