জলবন্দি অসহায়তার ষষ্ঠদিন। এখনও হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। গত চার দশকের মধ্যে বাংলার এমন বানভাসি পরিস্থিতি মানুষ দেখেনি। হাজার হাজার মানুষের ঠাঁই হয়েছে ত্রাণশিবিরে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের। ভেঙে পড়েছে ঘরবাড়ি। কিন্তু এর মধ্যেও অমানবিকতার সীমা অতিক্রম করে ফের জল ছাড়ল ডিভিসি। সোমবার মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে নতুন করে প্রায় ৪০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। রবিবারও এই দুই জলাধার থেকে প্রায় ৫০ হাজার জল ছেড়েছে ডিভিসি। ফলে আগামী কয়েকদিন আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন এবং ত্রাণ বিতরণ করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জেলায় জেলায় বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে ওষুধপত্র, পানীয় জল, শুকনো খাবার-সহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বন্যাকবলিত এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছেন তৃণমূলের সাংসদ-মন্ত্রী থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা। সোমবারও হুগলির সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খানাকুল, পুরশুড়া, গোঘাট অঞ্চলে নৌকোয় ঘুরে ঘুরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেন আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ। সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরাও। অন্যদিকে, কাঁসাই নদীর জলস্তর অনেকটাই নেমেছে। তবে দুর্ভোগ চলছে এখনও। এদিন ডেবরার জোতহাড়ো, ত্রিলোচনপুর, চকঅর্জুনী, খাজুরি, চকমাধুরী এলাকায় স্পিডবোটে করে ত্রাণ নিয়ে হাজির হন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান ও বিধায়ক হুমায়ুন কবির। ত্রাণবিলিতে ছিলেন পুলিশ আধিকারিকরাও। প্রায় ৫০টিরও বেশি পরিবারকে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন মন্ত্রী। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তরফেও বহু মানুষের হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এদিকে পাঁশকুড়া, ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও একই অবস্থা। দুর্গতদের পরিষেবায় আশা কর্মীরাই ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকায়। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও এগরা মহকুমার প্রায় দশটি গ্রাম সুবর্ণরেখা নদীর উপচে পড়া জলে প্লাবিত।