ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সম্প্রসারণের কাজের জন্য আবারও পর পর পাঁচ-ছ’টি বাড়িতে দেখা দিয়েছে ফাটল ৷ এমনকি ফাটল ধরেছে রাস্তায় ৷ ফের একবার বাড়ি ধসের আতঙ্ক ফিরে এল বৌবাজারের দুর্গাপিতুরি লেনের বাসিন্দাদের মধ্যে ৷ প্রশাসন থেকে স্থানীয় মানুষ সবাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছে মেট্রো রেলের সম্প্রসারণের কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডকে। এই পরিস্থিতিতে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন গত আড়াই বছরে একবারও কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কোন যোগাযোগ করেনি ৷ এমনকি গতকাল রাতে যখন ঘটনাটি ঘটে তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক বা ইঞ্জিনিয়র ৷ যা নিয়ে কেএমআরসিএল এর তরফে সাফাই দেওয়া হয়েছে ৷ বর্তমানে এই অংশের কাজ চলছে প্রজেক্ট ডিরেক্টর এন সি কারমারিল তত্ত্বাবধানে ৷ তিনি বলেন, মাটির নিচের জলস্তরের উপরের ফাটল এর জন্য দায়ী ৷ কারণ, ২০১৯ সালে যখন ওই অঞ্চলের মাটি ও মাটির উপরে থাকা বাড়ি ধসে পড়ে তখনই ভূস্তর পরীক্ষা করা হয়েছিল ৷ সেই সময় দেখা যায় এই অঞ্চলে কিছুদূর অন্তরে রয়েছে জলস্তর বা অ্যাকুইফার ৷ এই ৯ মিটার লম্বা সুড়ঙ্গ পথে ১১টি এমন জায়গা রয়েছে, যেখান দিয়ে হঠাৎ করেই ঢুকে পড়তে পারে জল ৷ এর মধ্যে ১০টি জায়গাকে কংক্রিট দিয়ে গ্রাউটিং করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৷ এই অঞ্চলে প্রায় ৯ মিটার লম্বা সুড়ঙ্গের ভিতরে কাজ চলছিল ৷ এই সুড়ঙ্গের একদিকে রয়েছে এসপ্ল্যানেড এবং অপরদিকে রয়েছে শিয়ালদা ৷ ওই অংশের কাজ নির্বিঘ্নেই এগিয়েছে ৷ তবে, সমস্যা দেখা দিয়েছে এসপ্ল্যানেডের দিকের সুড়ঙ্গের মুখে ৷ এই অংশের মাটির নিচে চৌবাচ্চা তৈরি করা হয়েছিল ৷ যেখান থেকে টানেল বোরিং মেশিন ১ ও টানেল বোরিং মেশিন ২ বের করে নিয়ে আসা হয় ৷ সেই চৌবাচ্চাটিকে ভরাট করে জয়েন্টগুলি বন্ধ করার কাজ চলছিল ৷ এই কাজ করতে কংক্রিট বক্স জয়েন্ট করে জোড়া দেওয়া হবে ৷ তার জন্য সুড়ঙ্গের আরও ৫ মিটার নিচে খনন করে সেখানে কংক্রিট করতে হয় ৷ কিন্তু, ৫ মিটার নিচ থেকেই ওই জায়গার জলস্তর থেকে জল ঢুকতে শুরু করে টানেলে ৷ পাশাপাশি, গত দু’দিন ধরে বৃষ্টির ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায় বলে কেএমআরসিএর এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর জানিয়েছেন ৷ ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে কেএমআরসিএল এর পক্ষ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করা হয়েছে ৷ মুম্বই থেকে সেই বিশেষজ্ঞ দল কলকাতায় আসবে ৷ তারাই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী পরিকল্পনা করবে বলে জানিয়েছেন কেএমআরসিএর এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর ৷