দেশ

‘উত্তর পূর্ব ভারতে থেকে সন্ত্রাসবাদ, মাওবাদ ও বিদ্রোহের ঘটনা ৬৫ শতাংশ কমেছে’, দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

শনিবার পুলিশ স্মৃতি দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির চাণক্যপুরীর ন্যাশনাল পুলিশ মেমোরিয়াল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাজির হন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ তিনি সেখানে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন ৷ পাশাপাশি জানান, উত্তর পূর্ব ভারত থেকে সন্ত্রাসবাদ, চরম বামপন্থা ও বিদ্রোহের ঘটনা ৬৫ শতাংশ কমানো গিয়েছে ৷তিনি জানান, নরেন্দ্র মোদি সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি বজায় রেখে কঠোর আইন তৈরি করেছে ৷ পুলিশ বাহিনীর আধুনিকীকরণের জন্য ‘পুলিশ প্রযুক্তি মিশন’ স্থাপন করে সরকার বিশ্বের সেরা সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করেছে ।অমিত শাহ আরও জানিয়েছেন, মোদি সরকার ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তনের জন্য সংসদে তিনটি বিল পেশ করেছে । তিনটি আইন ১৫০ বছরের পুরনো আইনের জায়গায় বলবৎ করা হবে ৷ প্রতিটি নাগরিকের জন্য প্রাপ্য সমস্ত সাংবিধানিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেবে ৷ এই প্রস্তাবিত আইনগুলি ভারতীয়ত্বকেও প্রতিফলিত করবে ।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ কর্মীদের প্রচেষ্টা ও সাফল্যের জন্য উত্তর পূর্বে সন্ত্রাস, চরম বামপন্থা এবং বিদ্রোহের ঘটনা ৬৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে ৷ তিনি জানান, সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই, অপরাধ প্রতিরোধ, বিপুল জনতার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কিংবা দুর্যোগের সময় ঢাল হিসেবে কাজ করে জনগণকে রক্ষা করা, সব পরিস্থিতিতেই পুলিশের সদস্যরা নিজেদের প্রমাণ করেছেন ।দুর্যোগে পুলিশ কর্মীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, অতীতে এনডিআরএফ-এর মাধ্যমে বিভিন্ন বাহিনীর পুলিশ কর্মীরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সারা বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছে । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, বিপর্যয় যত বড়ই হোক না কেন, এনডিআরএফ কর্মীরা যখন সেখানে পৌঁছান, তখন মানুষ আস্থা পায় যে এনডিআরএফ এসেছে ৷ এখন কোনও সমস্যা নেই ৷ অমিত শাহ আরও জানিয়েছেন, মোদি সরকার পুলিশ কর্মীদের কল্যাণের জন্য পরিচালিত বেশ কয়েকটি প্রকল্পের মানোন্নয়নে নিয়মিত ব্যবধানে নানা পরিবর্তন করছে ৷ মোদি সরকার সমস্ত কর্মীদের কল্যাণে নিবেদিত এবং তাদের সুরক্ষার জন্য উদ্বিগ্ন ৷ স্বাধীনতার পর থেকে দেশের সেবায় জীবন উৎসর্গকারী ৩৬ হাজার ২৫০ জন পুলিশের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি ৷ এই নিয়ে তাঁর মন্তব্য, পুলিশ স্মৃতিসৌধ শুধু প্রতীক নয়, দেশ গঠনে পুলিশের ত্যাগ ও নিষ্ঠার স্বীকৃতি । ১৯৫৯ সালের ২১ অক্টোবর লাদাখের হট স্প্রিংসে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত চিনা সৈন্যদের অতর্কিত হামলার সময় কর্তব্যরত অবস্থায় ১০ জন পুলিশ শহিদ হন । সেই থেকে প্রতি বছর 21 অক্টোবর এই শহিদদের ও অন্যান্য সমস্ত শহিদ পুলিশকর্মীদের সম্মান জানাতে এই দিনটি পালিত হয় ৷ পুলিশ কর্মীদের ত্যাগ স্বীকার এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও অখণ্ডতা রক্ষায় তাদের প্রধান ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৮ সালে পুলিশ স্মৃতি দিবসে নয়াদিল্লির চাণক্যপুরীতে ন্যাশনাল পুলিশ মেমোরিয়ালের (পুলিশ স্মৃতিসৌধ) উদ্বোধন করেন ৷এই স্মৃতিসৌধে একটি কেন্দ্রীয় ভাস্কর্য ওয়াল অফ ভ্যালোর এবং একটি জাদুঘর রয়েছে । কেন্দ্রীয় ভাস্কর্য, যা একটি ৩০ ফুট উচ্চ গ্রানাইট মনোলিথ সেনোটাফ ৷ এটি পুলিশকর্মীদের শক্তি, সহনশীলতা এবং নিঃস্বার্থ সেবার জন্য তৈরি করা হয়েছে । স্বাধীনতার পর থেকে দায়িত্ব পালনে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশের সদস্যদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের অবিচল স্বীকৃতি হিসেবে ওয়াল অফ ভ্যালোর দাঁড়িয়ে আছে । এর উপরে শহিদদের নাম খোদাই করা আছে ৷ জাদুঘরটিকে ভারতে পুলিশি ব্যবস্থা সংক্রান্ত একটি ঐতিহাসিক এবং বিকশিত প্রদর্শনী হিসেবে তৈরি করা হয়েছে ।