আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তারি এবং জেলে যাওয়ার পরেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ছাড়েননি। মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টও তাঁকে কোনও নির্দেশ দেয়নি। কিন্তু জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরনোর দু’দিন বাদে অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজেই ঘোষণা করলেন, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন আর দিন দুয়েকের মধ্যেই। তাঁর বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তারপরেও মানুষ যদি তাঁকে সৎ বলে মনে করে, মানুষ যদি আবারও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চায়, তা হলে আবার ভোটে জিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হবেন। রবিবার দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সভামঞ্চ থেকে এই ঘোষণার পরে ‘ইন্ডিয়া’র জোট শরিক দলের মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশেও স্পষ্ট বার্তা দিলেন কেজরিওয়াল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তামিলনাড়ুর এমকে স্ট্যালিন, কর্নাটকের সিদ্দারামাইয়াদের উদ্দেশে কেজরির সতর্কবার্তা, আগামী দিনেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইডি-সিবিআইকে দিয়ে তাঁদের হেনস্থা করার চেষ্টা করবে, অন্য মুখ্যমন্ত্রীদেরও জেলে ভরার চেষ্টা হবে। কিন্তু তাঁরা যেন মুখ্যমন্ত্রিত্বের চেয়ার না-ছাড়েন। আপ সুপ্রিমোর কথায়, ‘দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের হাতজোড় করে বলব, প্রধানমন্ত্রী যদি (আপনাদের) জেলে ঢোকানোর হিম্মত দেখান, ইস্তফা দেবেন না। প্রয়োজনে জেল থেকে সরকার চালান।’ একদিকে কেজরি নিজে মুখ্যমন্ত্রিত্বের চেয়ার ছেড়ে দিচ্ছেন, অন্যদিকে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলের মুখ্যমন্ত্রীদের এই পরিস্থিতিতে কুর্সি ছাড়তে নিষেধ করছেন— এই বার্তার মধ্যে পরস্পরবিরোধিতা দেখছেন অনেকেই। আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, দিল্লিতে বিধানসভা ভোট নির্ধারিত আছে মাস পাঁচেক বাদে। কেজরি হয়তো চলতি বছরের শেষেই মহারাষ্ট্রের সঙ্গে দিল্লিতে ভোটে যেতে চাইছেন। তার আগে তিনি দিল্লির জনতার সহানুভূতির হাওয়া নিজের পালে জোরদার করতে চান। পাশাপাশি আবার কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে অপব্যবহারের যে অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে, তাকে কাজে লাগিয়ে অন্য শরিকদের বিজেপির বিরুদ্ধে এককাট্টা করতে চাইছেন। বিজেপি যদিও কেজরির বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। দিল্লি কংগ্রেসের প্রধান দেবেন্দ্র যাদবও কেজরির বক্তব্যকে ‘রাজনৈতিক স্টান্টবাজি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তৃণমূল নেতৃত্ব এ দিন কেজরির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোনও মন্তব্য করেননি।