দেশ জুড়ে জাতীয় প্রতীক বা ন্যাশনাল এমব্লেমের সিংহমূর্তির মুখ নিয়ে বিতর্ক চলছে। বৃহস্পতিবার সেই বিতর্ক একপ্রকার নস্যাৎ করে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, দেশ ক্রমেই জরুরি অবস্থার দিকে যাচ্ছে । মানুষ যেখানে খেতে পাচ্ছে না, সেখানে সিংহের মুখ নিয়ে বিতর্ক করা অপ্রাসঙ্গিক ৷ গত কয়েকদিন ধরে জাতীয় থেকে রাজ্য সর্বস্তরে জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভের অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা । সেই দলে এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও রয়েছে । তবে এদিন অভিষেক স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ন্যাশনাল এমব্লেমের সিংহ মূর্তি হিংস্র কি না, তা বিচারের থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ দেশের মানুষের অবস্থা । তাঁর মতে, দেশে জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । মধ্যবিত্ত মানুষ থেকে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ, মূল্যবৃদ্ধির দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন । এই অবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেস তাঁদের পাশে আছে । এদিন একুশে জুলাইয়ের এর প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করতে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে যান অভিষেক ৷ সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘বিজেপি পৈতৃক সম্পত্তির মতো করে দেশটাকে চালাচ্ছে । স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে প্রধানমন্ত্রী বলছেন আমরা অমৃত মহোৎসব পালন করছি । কিন্তু আজকে ভারতবর্ষের নাগরিকদের যে অবস্থা আপনারা করেছেন, এতটা পরাধীন ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষেও ছিল না । এটা আমাদের কাছে লজ্জার ।’’ এদিন অভিষেক দাবি করেন, ‘‘সিংহ অ্যাগ্রেসিভ না ডিফেন্সিভ তার চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আজকে দেশের অবস্থা । এই মুহূর্তে দেশের অবস্থা এমারজেন্সির থেকে ১০২ টাকা লিটার । ডিজেল ৯৩ টাকা, পেট্রল ১০৭ টাকা লিটার । রান্নার গ্যাসের দাম ১১০০ টাকা । ভাবতে পারেন সাধারণ মানুষের অবস্থা ! আমরা এই অবস্থায় মানুষের পাশে ছিলাম । আগামিদিনেও মানুষের পাশেই থাকব ।’’ তাঁর এও অভিযোগ, ‘‘বিজেপি সব বদলে দিচ্ছে । নাম বদলে দিচ্ছে সিম্বল বদলে দিচ্ছে, সব ।’’ এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি পদের অবমাননার অভিযোগ তুলেছেন । তিনি বলেন, ‘‘নাম বা সিম্বল বদলে দেওয়ার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ, যেভাবে ন্যাশনাল এমব্লেমকে উন্মোচন করা হয়েছে । উন্মোচন করার সময় দেশের রাষ্ট্রপতিকে ডেকে তা করা উচিত ছিল । লোকসভা বা রাজ্যসভা সমন করেন রাষ্ট্রপতি । আপনারা মুখে বলছেন একজন এসসিকে রাষ্ট্রপতি করেছি । তাঁকে যতটুকু সম্মান দেওয়ার প্রয়োজন, তা দেওয়া হচ্ছে না । চারজন মিলে হটকারিতার মধ্যে দিয়ে যে করেই হোক ন্যাশনাল এমব্লেম উন্মোচন করতে হবে ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা না হয় বাদ দিলাম বিরোধীদের আপনারা ডাকবেন না । তো আমাদের প্রশ্ন কেন রাষ্ট্রপতিকে ডাকা হল না ! ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি যিনি সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন তাকেও তাঁর সম্মানটা দেওয়া হবে না । টোকেন রিপ্রেজেন্টেশন দেখাতে আপনারা বলছেন আপনারা জনজাতির থেকে রাজনীতি রাষ্ট্রপতি করছেন । তাহলে যখন রাম মন্দির উদ্বোধন হল কেন রাষ্ট্রপতিকে ডাকা হল না । রাম মন্দিরের উদ্বোধনে কতজন পণ্ডিত ছিল, সেখানে ক’জন সিডিউল কাস্ট ছিলেন !’’