সদ্য সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু । এই সেতুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে জনজীবনে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে । সেই পদ্মা সেতু পরিদর্শনের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । গত ১২ জুলাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা একটি চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে আজ, মঙ্গলবার । এই চিঠি থেকে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন । তবে নবান্নের তরফে আলাদা করে এই চিঠি সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি । চিঠিতে মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন তিনি। চিঠিতে লেখা রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সুবিধা মত সময়ে বাংলাদেশে সফরে এসে পদ্মা সেতু পরিদর্শন করুন তিনি। সেই সঙ্গেই লেখা, আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আসছেন নয়া দিল্লি সফরে। সেই সফরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তিনি। আরও লেখা রয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ ও পশ্চিমবঙ্গের জনগণ একাত্ম। মুজিবর কন্যা লিখেছেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের আত্মিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে। বাণিজ্যিক সম্পর্কে সম্ভাবনার নতুন দ্বার এই সেতু বলেও চিঠিতে লিখেছেন তিনি। এমনিতে
মমতা এবং শেখ হাসিনার সম্পর্ক খুব মধুর । শেষবার তাঁদের সাক্ষাৎ হয়েছিল ইডেন গার্ডেন্সে গোলাপি বলে টেস্ট খেলার উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে । এরপর আলাদা করেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মমতা । প্রতিবছরই কখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, কখনও এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পরস্পরের মধ্যে কুশল আদান-প্রদান করেন । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কখনও আম পাঠান, কখনও মমতাকে পাঠান ইলিশ । একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এ রাজ্যের মিষ্টি, শাড়ি-সহ বিভিন্ন উপহার পাঠান আলাদা করে । মোটের উপর এই দুই রাজ নেতার সম্পর্ক বরাবরই দিদি এবং বোনের । এবার পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে কথোপকথন নতুন করে একটা সৌহার্দ্যের বার্তা নিয়ে এসেছে দুই দেশের মধ্যে । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘আপনি ইতিমধ্যেই জেনেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের দেখানো পথে আত্মনির্ভরশীল সোনার বাংলা বিনির্মাণে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে । এই সেতু বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তথা সমগ্র ভারতের আত্মিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি । সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ রইল ।’’ তিনি লিখেছেন, ‘‘দুই বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি ও আদর্শগত সাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে বিদ্যমান সম্পর্ককে দৃঢ়তর করতে একযোগে কাজ করার বিকল্প নেই ।’’