বিদেশ

অবশেষে ছাত্রদেরই জয়! কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টের

অবশেষে এল ঐতিহাসিক রায়৷ যে কোটা নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে রক্তস্রোত বয়ে গিয়েছে ঢাকার রাজপথে, বাংলাদেশের অলিতে গলিতে, অবশেষে রায় গেল সেই আন্দোলনকারীদের পক্ষেই৷ বাংলাদেশ হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায় খারিজ করে দিয়ে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগই হবে মেধার ভিত্তিতে৷ বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মীয়-উত্তরপুরুষের জন্য, ২ শতাংশ হবে জনজাতি এবং শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য বরাদ্দ৷ আগে বাংলাদেশের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ছিল প্রায় ৫৬ শতাংশ৷ তার মধ্যে ৩০ শতাংশই ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের উত্তরসূরিদের জন্য বরাদ্দ৷ ৫ শতাংশ ছিল মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত৷ ২০১৮ সালে এই কোটা ব্যবস্থা বিরোধী বিপুল আন্দোলনের জেরে অবশেষে তা বাতিল করতে বাধ্য হয় হাসিনা সরকার৷ কিন্তু, সংরক্ষণ ব্যবস্থায় যে সংস্কার করেছিল শেখ হাসিনা সরকার, ২০২১ সালে সেই সংস্কারকে অবৈধ দাবি করে হাইকোর্টে মামলা করে ২ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার৷ চলতি বছরের গত ৫ জুন সেই মামলায় তাঁদের জয় হয়৷ ২০১৮ সালে হাসিনার কোটা ব্যবস্থার পরিশোধনকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। ফলে পূর্ববর্তী কোটা ব্যবস্থাই ফের বহাল হয়৷ এরপরেই জনতার বিপুল জনরোষ৷ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুরু হয়ে যায় ছাত্র আন্দোলন৷ পথে নেমে এসে বিক্ষোভ দেখান সবশ্রেণির মানুষ৷ পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বাংলাদেশ৷  গত এক সপ্তাহে মৃত্যু হয় প্রায় ১৫০জনের৷ যদিও এর মধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল হাসিনা সরকার। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মামলাটি লড়ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিনউদ্দিন। এদিন তিনি শুনানির শুরুতেই জানান, কোটা ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষেই সওয়াল করবে সরকার৷ সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় শুনানি। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, শীর্ষ আদালতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক যুক্তি দিয়েছে হাসিনা সরকার। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সামনে আইনজীবী আমিনউদ্দিন জানিয়েছেন, সংরক্ষণ নিয়ে জুন মাসে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তাতে স্ববিরোধিতা রয়েছে। সেই কারণেই রায়টি বাতিলের আবেদন জানানো হচ্ছে। সংরক্ষণ নিয়ে সংস্কারের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হাসিনা সরকার। এই ধরনের সিদ্ধান্তে আদালত আদৌ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রবিবার হাসিনা সরকারের লিভ টু আপিলের শুনানি হয়। সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির পরে দুপুর দেড়টা নাগাদ রায় দেওয়া হয়।