মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার এক দিনের মধ্যেই পরিবহণ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানালেন ফিরহাদ হাকিম। প্রথমত, শহর ও শহরতলিতে নতুন অটো রুট চালু করা। দ্বিতীয়ত, কলকাতা শহরে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচলে গুরুত্ব। তৃতীয়ত, মালবাহী গাড়িতে অতিরিক্ত ভার বহন বন্ধ করা। ওভারলোডিং রুখতে কড়া বার্তা দিলেন ফিরহাদ হাকিম। পরিবহণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মঙ্গলবার প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করলেন তিনি। সেই সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই একাধিক নতুন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, আপাতত কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলাই তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য। এদিন থেকে রাজ্যে গণপরিবহণের কর্মীদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে। খোদ পরিবহণমন্ত্রী হাজির ছিলেন সেই টিকাকরণের শিবিরে। গোটা ব্যবস্থা দেখভাল করেন তিনি। এর পর সাংবাদিক বৈঠক করেন ফিরহাদ। সেখান থেকে জানান, ওভারলোডিং রুখতে জরিমানা বাড়ানোর পথে হাঁটবে রাজ্য। মন্ত্রীর কথায়, ‘ওভারলোডিং বড় দুর্নীতি। টেম্পোরারি ওয়ে ব্রিজ তাই বাড়ানো হচ্ছে। যাতে ওভারলোডিং দেখা যায়। রাস্তা খারাপ হচ্ছে। দূষণ বাড়ছে। ওভারলোডিং হলে ফাইন যা আছে, তা বাড়ানো হবে। কারণ তার জন্যে রাস্তা খারাপ হচ্ছে।’ তবে জরিমানার পরিমাণ কতটা বাড়ানো হবে, তা নিয়ে পরিবহণ মন্ত্রী কিছু জানাননি। প্রাথমিক ভাবে তিনি শহর ও শহরতলির যান চলাচলকে গুরুত্ব দিয়েছেন। জানিয়েছেন, যাত্রী সমস্যার কথা মাথায় রেখে কলকাতায় বেশ কয়েকটি নতুন অটো রুট চালু করা হবে। ফিরহাদের মতে, ”কলকাতায় অনেক নতুন মেট্রো স্টেশন চালু হয়েছে। আরও হবে। মেট্রোর স্টেশনের সঙ্গে মানুষের যোগাযাগ স্থাপনের জন্য নতুন অটো রুট চালু করা প্রয়োজন। এ ছাড়া কলকাতা শহরের পরিধিও ক্রমশ বাড়ছে। শহরতলির দিকে অনেক ছোট রাস্তা মূল রাস্তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু ছোট রাস্তাগুলিতে যানবাহন ঠিক মতো না চলায় যাতায়াতে সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। তাই সেখানেও নতুন অটো রুট চালু করা হবে।” তবে কোন কোন জায়গায় নতুন অটো রুট চালু করা হবে, তা এখনও নির্দিষ্ট নয়। ফলে এ নিয়ে একটি সমীক্ষা করবে পরিবহণ দফতর। সেই সমীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতেই নতুন রুট চালু হবে বলে জানান পরিবহণ মন্ত্রী। পরিবহণের দায়িত্ব নেওয়ার পরই কলকাতার দূষণ কমানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন ফিরহাদ। সেই লক্ষ্যে আগামী দিনে বৈদ্যুতিক বাস চলাচলের উপর জোর দেওয়ার কথা বলেন তিনি। যদিও বর্তমানে কলকাতা শহরে বৈদ্যুতিক বাস চলছে। তবে ফিরহাদের মতে, ”আগামী দিনে দূষণ কমানোর জন্য বৈদ্যুতিক যান চলাচলে আমরা অধিক গুরুত্ব দেব। তা ছাড়া পেট্রোল, ডিজেলের দাম যে ভাবে বাড়ছে তা থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ি রেহাই দিতে পারে। তাই ওই পরিষেবার জন্য শহরে প্রথম চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হবে। তার পরই বাড়ানো হবে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচলের কাজ।” ১৫ বছরের বেশি পুরনো গাড়ির বদলে নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার জন্য সরকার সাহায্য করবে বলেও জানান ফিরহাদ। তবে এই প্রক্রিয়াটি দীর্ঘমেয়াদি বলে তিনি মনে করেন।