অবশেষে অযোধ্যায় সম্পন্ন হল রাম মন্দিরের ভূমিপুজো। আর সেই মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ সকালে নির্ধারিত সূচি মেনেই দিল্লি থেকে লখনউ তারপর লখনউ থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে সকাল ১১টা ৩০মিনিট নাগাদ অযোধ্যার কলেজ গ্রাউন্ডে মেকশিফট হেলিপ্যাডে নামলেন মোদি। তাঁকে স্বাগত জানাতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রথমেই যাবেন হনুমানগড়হি মন্দির। ঐতিহ্য মেনে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দ্বিতীয় গেট দিয়ে হনুমান গঢ়ি মন্দিরে প্রবেশ করেন মোদী। সকাল ১১ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ভগবান হনুমানের মন্দিরে আরতিও করেন। তারপর মন্দিরের পরিক্রমা করেন। শেষে মন্দিরের প্রধান মহন্ত রমেশ দাস মোদীকে একটি পাগড়ি, মুকুট উপহার দেন। সেখানে ১০ মিনিট কাটানোর পর রাম জন্মভূমির উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর দীর্ঘ ২৯ বছর পর বুধবার দুপুর ১২ টা নাগাদ অযোধ্যায় পা রাখেন নরেন্দ্র মোদি। সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর যজ্ঞে অংশগ্রহণ করেন। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই পুজোয় অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন ৪০ কেজি রুপোর ইট দিয়ে এই মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন তিনি। রুপোর প্রধান শিলা সহ মোট ৯টি শিলার পুজো করলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমেএই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ তালিকায় ছিলেন ২৫০ জন। কিন্তু একদিকে উত্তরপ্রদেশে বাড়তে থাকা করোনার সংক্রমণ এবং অন্যদিকে ৫ আগস্ট অযোধ্যায় জঙ্গি হামলার সতর্কবার্তায় ছবিটা বদলে দিয়েছে। তাই ১৭০ জন মত অতিথি উপস্থিত ছিলেন গোটা শিলান্যাস অনুষ্ঠানে। মঞ্চে ছিলেন মাত্র পাঁচজন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল এবং মহন্ত নিত্যগোপাল দাস। আজ রামজন্মভূমি পুজো অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আজ ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আজ এক ইতিহাসের সাক্ষী থাকলাম। এমন মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য বলেও বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। আজ এই পূন্যদিবসে সমস্ত রামভক্তদের অভিনন্দন জানালেন মোদি। তিনি আরও বলেন, রামজন্মভূমি আজ মুক্ত। সরযূ নদীর তীরে সূচনা হল স্বর্ণযুগের। রামমন্দিরের জন্য অনেকেই জীবন বলিদান দিয়েছেন। তাই আজকের দিন হল ত্যাগ ও তপস্যার দিন। আর এই মন্দির হল ত্যাগ ও তপস্যার প্রতীক। এটি আমাদের সংস্কৃতির প্রতীক। আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাবনার প্রতীক। এই মন্দির তৈরির পর সারা বিশ্ব থেকে দর্শনার্থীরা এখানে আসবেন। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থারও পরিবর্তন হবে। উল্লেখ্য, গুজরাত থেকে অযোধ্যা ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লালকৃষ্ণ আদবানির রাম-রথযাত্রা দিয়ে যার শুরু। তার থেকেই সূত্রপাত হয়েছিল ভারতীয় রাজনীতির পট পরিবর্তনের। ৩০ বছর আগের অযোধ্যা যাত্রার সেই মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদি ছিলেন নেহাৎ পার্শ্বচরিত্র।নায়ক ছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানি। বদলে গিয়েছে ভূমিকা। আজ যদিও গোটা অনুষ্ঠানেরই সাক্ষী থাকলেন আদবানি। কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থেকে নয় করোনা আবহে বাধ্য হয়ে দিল্লির পৃথ্বীরাজ রোডের বাসভবনে গৃহবন্দি হয়েই।