অবশেষে কাছাকাছি এলেন বিমল-বিনয়। আর তাতেই যুদ্ধ সমাপণের ইঙ্গিত মিললো। সেই সঙ্গে স্বস্তির বার্তা পাহাড়ের পাশাপাশি রাজ্যের শাসক শিবিরেও। তবে উদ্বেগ বাড়লো গেরুয়া শিবির ও তাঁদের জোটসঙ্গী জিএনএলএফের। কেননা এদিন মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিলেন মোর্চার দুই মাথা বিমল গুরুং ও বিনয় তামাং। তার জেরেই পাহাড় জুড়ে ছড়ালো জল্পনা যে মোর্চার দুই শাখা ফের এক হচ্ছে। আসলে একুশের বিধানসভা নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে যে, মোর্চার ভোট ভাগ হলে আর জিএনএলএফের ভোট গেরুয়ার বাক্সে পড়লে তাতে লাভ বিজেপিরই। তাই পাহাড়ের ভোট যাতে আর ভাগ না হয় তার জন্য মোর্চার দুই শাখার জোড়া লাগা খুবই দরকার ছিল। এবশেষে একসময়কার যুযুধান দুই নেতা আবারও কাছাকাছি আসায় ফের মোর্চার জোড়া লাগার সম্ভাবনাও জোরদার হয়ে গেল যা বিজেপির পক্ষে যথেষ্ট উদ্বেগের। অজ্ঞাতবাস কাটিয়ে গুরুং পাহাড়ে ফিরলেও তাঁর বিরোধীতা শুরু করেছিলেন বিনয় তামাং। তার জেরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকেও অস্বস্তিতে পড়তে হয়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তাই তৃণমূলের তরফেই ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল যে পাহাড়ে তাঁরা কোনও প্রার্থী দেবে না। মোর্চাই সেখানে প্রার্থী দেবে। আবার মোর্চা দুই শিবিরে ভাগ হয়ে যাওয়ায় দুই শিবির থেকেই প্রার্থী দেওয়া হয় পাহাড়ের ৩ আসনে। তাতে কালিম্পং আসনে বিনয় সমর্থিত নির্দল প্রার্থী জিতলেও গুরুং শিবিরের কোনও প্রার্থীই জয়ী হয়নি। বরঞ্চ পাহাড়ের ২টি আসনেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। সেই ফলাফলই দুই শিবিরকেই বুঝিয়ে দিয়েছিল ফের এক হতে না পারলে আগামী দিনে তাঁদেরই বিপদ বাড়বে। পাহাড়ের ভোট পুরোপুরি তাঁদের হাতের বাইরে চলে যাবে। সেই জায়গা থেকেই গত মাসে বিনয় মোর্চার পতাকা ফেরত পাঠিয়েছিলেন গুরুংয়ের কাছে। জানিয়েছিলেন তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে না যাচ্ছেন। আগামী দিনে কী করবেন তা পরে জানাবেন। বিনয় কোথায় যান, কি করেন তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে কৌতুহল তৈরি হয়েছিল বৈকি। সেই কৌতুহলে সম্ভবত এদিন কিছুটা বাঁধ পড়ে গেল। কেননা বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয় তামাংয়ের বৈঠক হতেই এটা মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে মোর্চার জোড়া লাগা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা মাত্র। বিনয় আর বিমল দুইজনের জন্যই এটা খুবই প্রয়োজনীয় ছিল।