জেলা

সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তাদের মদতেই চলতো গরুপাচার, চার্জশিটে দাবি ইডি-র

গরুপাচার কাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটরের পেশ করা চার্জশিটে বিএসএফের নাম উঠে এল ৷ সরাসরি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একাংশের বিরুদ্ধে গরুপাচারে মদতের অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷ ইডির পেশ করা চার্জশিটে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে গরুপাচারকারীদের সঙ্গে বিএসএফএর উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একটি যোগসাজশ গড়ে উঠেছিল ৷ জানা গিয়েছে রাত ১১টা থেকে ভোর ৩টে পর্যন্ত সীমান্ত খুলে কার্যত খুলে দেওয়া হত যাতে সহজেই গরুপাচার করা যায় ৷চার্জশিটে এও স্পষ্ট করা হয়েছে বিএসএফের আধিকারিকদের একাংশের সঙ্গে আব্দুল লতিফ এনামুল হকের মতো একাধিক গরুপাচারের মাথাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ৷ এমনকী পাচারকারী এবং গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল বিএসএফের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরও৷ আর তাঁরা মাঝে মধ্যেই বৈঠক করতেন বলেও চার্জশিটে দাবি করেছে ইডি ৷ এই বৈঠকগুলিতেই গরুপাচার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হত দুতরফে ৷ইডি সূত্রে খবর মূলত কোন কোন গেট দিয়ে রাতের অন্ধকারে গরু পাচার করা হবে তার বিস্তারিত তথ্য আগে থেকেই জানা থাকত ৷ আর সেই মতো বিএসএফ আধিকারিকদের নির্দেশে সীমান্তের গেট খুলে দেওয়া হত ৷ সেখান দিয়ে বিনা বাধায় গরুপাচার চলত ৷ মূলত নদিয়া মুর্শিদাবাদ বীরভূমসহ কয়েকটি জেলার সীমান্তে বিএসএফএর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটরের চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ এর আগে গরুপাচারকাণ্ডে বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই ৷ তাঁর নামে বেহিসেবি সম্পত্তির হদিশও পেয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ৷ এমনকী তাঁর শ্বশুর এবং স্ত্রীর নামেও একাধিক সম্পত্তি ছিল বলে উঠে এসেছিল তদন্তে ৷ এ সবের তদন্তে নেমেই গরুপাচারের এই বিশাল বেআইনি কর্মকাণ্ড সামনে আসে ৷ সেখান থেকেই নাম উঠে আসে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের নাম ৷ পরবর্তী ক্ষেত্রে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল নিজে ৷ আরও পরে তাঁর মেয়ে সুকন্যাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সতীশ কুমার একা নন ৷ তাঁর সঙ্গে সমানভাবে বিএসএফএর একাংশ যুক্ত ৷ এমন অভিযোগ এর আগে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলও একাধিকবার তুলেছিল ৷ তাদের দাবি ছিল সীমান্ত দিয়ে গরুপাচার করা অত সহজ নয় ৷ সেখানে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মদত অবশ্যই রয়েছে ৷ এবার ইডির চার্জশিটে বিএসএফএর মদতের কথা উল্লেখ থাকায় সেই অভিযোগ আরও প্রকোট হল ৷ স্বভাবতই একাধিক দুর্নীতি মামলা নিয়ে অস্বস্তিতে থাকা শাসক দল এই অভিযোগকে ঘিরে পালটা রাজনৈতিক আক্রমণ শানাতে চাইবে । “

প্রতীকী ছবি।