গত একুশে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসা সংক্রান্ত মামলার বিচার করতে কলকাতা হাইকোর্টে তৈরি হয়েছিল বৃহত্তর বেঞ্চ।এবার লোকসভা নির্বাচন পরবর্তীতে রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে অভিযোগের পাহাড় যেভাবে নিত্যনতুন আসছে,তাতে অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে রাজ্যের। রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকার সময় আরও বাড়ানো হল। আগামী বুধবার পর্যন্ত বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। আগামী বুধবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী বলেন -ক্ষ্ম আদালতের এহেন নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসায় শিকার ব্যক্তিরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা বোধ করছেন ক্ষ্ম। উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল ২১ জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার জন্য। এবার সেই মেয়াদ আরও বাড়াল কলকাতা হাইকোর্ট।উল্লেখ্য, বাংলায় সাত দফার ভোট মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই মিটেছে। কিন্তু ভোট মিটতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ও গোলমালের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এসবের মধ্যে এবার রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সময়সীমা আরও বাড়াল আদালত। মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি, -’রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এখনও অশান্তির আবহ রয়েছে এবং বহু মানুষ এখনও ঘরছাড়া ‘। তাঁদের তরফে আদালতে আর্জি জানানো হয়, যাতে এই অভিযোগগুলির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া হয়। তাদের দাবি, অনেকের প্রাণের প্রশ্ন রয়েছে, সেই কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সময়সীমাও বাড়ানোর জন্য আর্জি জানান মামলাকারী পক্ষ। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এদিন শুনানি পর্বে বলেন, -’বাস্তব চিত্রটি কী, সেটা জানতে চায় আদালত’। সে কথা শুনে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ‘অভিযোগ সত্যি কি না? তা দেখা উচিৎ। ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে রাজ্যে ১৯ জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখতে বলেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। পরে কলকাতা হাইকোর্ট সেই মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২১ জুন পর্যন্ত। সেই হিসাবে শুক্রবারই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, -’রাজ্য থেকে এখনই কেন্দ্রীয় বাহিনী ফিরছে না। বরং আগামী বুধবার অর্থাৎ ২৬ জুন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে’।প্রসঙ্গত, রাজ্যের হিসাব অনুযায়ী ৪ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ডিজির কাছে ইমেল মারফৎ ভোট পরবর্তী হিংসার হিসাব সংক্রান্ত অভিযোগ এসেছে ৮৫৯টি। এর মধ্যে ২০৪টি ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ১৭০টি অভিযোগ গ্রাহ্য হয়নি। ৪৫টি অভিযোগ পরিবার সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের ঘটনা বলে চিহ্নিত হয়েছে। ১৪টি অভিযোগ এখনও স্ক্রুটিনি করে দেখা হচ্ছে।আগামী বুধবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে।