দেশ বিবিধ

কোভিশিল্ড টিকা বিতর্কে মুখে কুলুপ এঁটেছে মোদি সরকার

কোভিশিল্ড টিকা বিতর্কে মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে ভারতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কোভিশিল্ড প্রতিষেধক বানানোর দায়িত্বে থাকা সিরাম ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, ২০২১-এর ডিসেম্বরের পরে কোভিশিল্ড টিকার চাহিদার অতিরিক্ত উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে সংস্থা জানিয়েছে, ওই টিকা ব্যবহারে টিকাগ্রাহকদের শরীরে কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তা টিকার ভায়ালে স্পষ্ট ভাবে লেখা ছিল। প্রশ্ন উঠেছে, যে ভাবে টিকা নেওয়ার পরে অনেকের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের নতুন কোনও ভাইরাসকে রুখতে তড়িঘড়ি তৈরি হওয়া প্রতিষেধক নেওয়া কি নিরাপদ হবে? অবশ্য বিজ্ঞানীদের বড় অংশের মতে, প্রতিষেধক নেওয়াই সে সময়ে করোনার হাত থেকে বাঁচার প্রশ্নে সেরা উপায় ছিল। গোড়া থেকেই তড়িঘড়ি করে বানানো করোনাভাইরাসের টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যার একটাই কারণ, ওই টিকা প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় না পাওয়া। ভারত-সহ গোটা বিশ্বেই করোনা টিকা নেওয়ার পরে অনেকের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। সম্প্রতি লন্ডনের আদালতে একটি শুনানিতে সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা মেনে নিয়েছে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে বানানো তাদের টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, অ্যাস্ট্রাজে নেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মিলে করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে ‘এজেডডি১২২২’ বা ভ্যাক্সিভ্যারিয়া টিকা বাজারে ছেড়েছিল, তা নেওয়ার পরে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। সংস্থাটি আদালতে জানিয়েছে, ওই টিকা নেওয়ার ফলে থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোম (টিটিএস) হয়েছে অনেকের। এতে শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, রক্তে অণুচক্রিকার ঘাটতি দেখা দেওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হয়েছে অনেকের। যা মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে সক্ষম।

কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কী ধরনের সমস্যা?
প্লেটলেট স্বাভাবিকের থেকে কমে গেলে মানবদেহে ইমিউন রেসপন্স এবং অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডিগুলি শরীরে প্রোটিন তৈরি করে ওই উপাদানগুলিকে আক্রমণ করে রক্তের প্লেটলেট কমিয়ে দিতে পারে। এই রোগের উপসর্গ হিসাবে শরীরে নানা স্থানে রক্ত জমাট বাঁধে। পাশাপাশি মাথাব্যাথা, পেটব্যাথা, শ্বাস নিতে অসুবিধা, পায়ে ফোলাভাব, চিন্তাভাবনার অসামঞ্জস্য, এমনকী, হার্ট অ্যাটাক বা সেরিব্রাল স্ট্রোকও দেখা দিতে পারে। যা মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে সক্ষম। একদিকে যেমন এই ভ্যাকসিন শরীরে স্থায়ীভাবে কোভিডের অ্যান্টিবডি তৈরি করছে, তেমনই হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, থ্রম্বোলাইটিস, ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা, ঘুমের মধ্যেই আচমকা মৃত্যু, শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট, দৃশ্যমানতার অস্পষ্টতা – এমন নানাবিধ উপসর্গ দেখা দিতে পারে।