বিবিধ

জাইডাস ক্যাডিলার জাইকোভ-ডি টিকার জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন দিতে সুপারিশ করল কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ দল

টিকা দিতে ইঞ্জেকশনের দরকার পড়বে না, সূঁচ না ফুটিয়েই ডোজ দেওয়া যাবে

জাইডাস ক্যাডিলার জাইকোভ-ডি টিকার জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন দিতে সুপারিশ করল সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের বিশেষজ্ঞ দল। জাইকোভ-ডি তিন ডোজের কোভিড টিকা। ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া-র অনুমোদন পেলেই এই টিকা দেওয়া শুরু হবে। সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটি বৃহস্পতিবার জাইডাস ক্যাডিলার দেওয়া আবেদনের বিষয়ে আলোচনা করে এবং তাদের তিন ডোজ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার সুপারিশ করে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ ড্রাগস কন্ট্রোলারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আহমেদাবাদ-ভিত্তিক ফার্মা সংস্থা জাইডাস ১ জুলাই ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া-র কাছে তাদের টিকার জরুরি ব্যবহার অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিলেন। সংস্থাটি জানিয়েছে যে তাদের টিকার পঞ্চাশটিরও বেশি কেন্দ্রে ক্লিনিকাল ট্রায়াল হয়েছে। অনুমোদল পেলেই জাইকোভ-ডি হবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রথম ডিএনএ টিকা, যা কোনও ভারতীয় কম্পানি দ্বারা প্রস্তুত। এছাড়াও এটি ভারতে অনুমোদন পাওয়া ষষ্ঠ টিকা হবে। ক্যাডিলা হেলথকেয়ারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শরভিল প্যাটেল জানিয়েছেন যে, জাইকোভ-ডি টিকা শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের নয়, ১২-১৮ বছর বয়সিদেরও সাহায্য করবে।  সংস্থার কর্ণধার পঙ্কজ পটেল জানিয়েছেন, প্লাসমিড ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড)ভ্যাকসিন জ়াইকভ-ডি মানুষের শরীরে সম্পূর্ণ নিরাপদ। করোনা-প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করবে। পঙ্কজ পটেল বলেছেন, মানুষের শরীরে টিকা দেওয়ার আগে বহুবার ল্যাবরেটরিতে সেফটি ট্রায়াল করা হয়। তার রিপোর্ট বেশ ভাল। দেখা গেছে, প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে। এই সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট দেখেই মানুষের শরীরে টিকা দেওয়ার জন্য অর্থাত্‍ হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমতি দেয় ড্রাগ কন্ট্রোল, রিভিউ কমিটি অন জেনেটিক ম্যানিপুলেশন (আরজিজিএম) ও সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরি (সিডিএল)। জাইকভ-ডি হল প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে সংস্থার ভ্যাকসিন টেকনোলজি সেন্টার (ভিটিসি)। ২০১০ সালে সোয়াইন ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন তৈরি করেছিল জাইদাস ক্যাডিলা। দেশের অন্যতম বড় এই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি হাম, মাম্পস, রুবেলা সহ একাধিক ভ্যাকসিন এনেছে ভারতের বাজারে। পঙ্কজ পটেল জানিয়েছেন, তাঁদের তৈরি জাইকভ-ডি ভ্যাকসিন ডিএনএ টেকনোলজিতে তৈরি হয়েছে। মূলত প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাকসিন। প্লাসমিড ডিএনএ হল ব্যাকটেরিয়ার এক্সট্রাক্রোমোজোমাল ডিএনএ। তাকেই বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে করোনার টিকা তৈরির কাজে লাগানো হয়েছে। এই প্লাসমিড ডিএনএ-র সেলফ-রেপ্লিকেশন ক্ষমতা আছে। দেহকোষে ঢুকে বিভাজিত হয়ে ভাইরাল প্রোটিনের অনুরূপ প্রোটিন তৈরি করবে। যার কারণে শরীরে বি-কোষ ও টি-কোষ সক্রিয় হয়ে উঠে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। এই টিকা দিতে ইঞ্জেকশনের দরকার পড়বে না। সূঁচ না ফুটিয়েই ডোজ দেওয়া যাবে বিশেষ পদ্ধতিতে, এতে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা কমবে বলেই দাবি করা হয়েছে।