জেলা

যতদিন বাঁচবেন ততদিন পাবেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, এই ভান্ডার উত্তরোত্তর বাড়তে থাকবে: মুখ্যমন্ত্রী

বাংলায় আজ ঘরে ঘরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। আর তা বাড়ছে। সংখ্যায় তো বটেই, বহরেও। সৌজন্যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগেই আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। এ শুধু আজ নিছক একটা প্রকল্প নয়। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অন্য নাম। এই ভাণ্ডারকে অনুসরণ করেই একের পর এক রাজ্যের সরকার ঘোষণা করেছে প্রকল্প। কোথাও লাডলি বেহনা, কোথাও মাঈয়া সম্মান যোজনা। ১০০ দিনের কাজ বন্ধ বাংলায়, আবাসের টাকা মিলছে না, খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ কেন্দ্র। এমন অবস্থায় বাংলার কোটি কোটি হেঁশেলে উনুনের আঁচ জিইয়ে রেখেছে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। এই ভাণ্ডার আরও বাড়বে। সংখ্যায়। টাকার অঙ্কেও। মঙ্গলবার মালদহের পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে এমনই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিএসএ গ্রাউন্ডের মঞ্চ থেকে বললেন, ‘আপনারা জানেন, আমি যেটা বলি সেটা করি। সিদ্ধান্ত হয়েছে, যিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান, তিনি সারা জীবন পাবেন (কারণ, ৬০ বছর হলেই সয়ংক্রিয়ভাবে তাঁরা বার্ধক্য ভাতা পেতে শুরু করেন)। এ ভাণ্ডার আমার মা-বোনেদের।’ উত্তরোত্তর আরও বাড়বে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। মালদহের সভা থেকে মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা জানালেন, ‘‘যতদিন বাঁচবেন ততদিন পাবেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। মা বোনেদের এটা ভান্ডার। এই ভান্ডার উত্তরোত্তর বাড়তে থাকবে। মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন না। ওদের পড়তে দিন। মেয়েরাই দেখবেন একদিন সংসার চালাবে।’’মমতার এই উক্তির পরই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দর মহলে। আশায় আম জনতাও। সকলেরই প্রশ্ন, তাহলে কি আসন্ন বাজেটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে কোনও নতুন ঘোষণা করতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ২৪ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে দুয়ারে সরকার শিবির। সেখানে নতুন করে জমা পড়বে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আবেদন। সঙ্গে যোগ হবে গত কয়েক মাসে জমা পড়া ন্যায্য আবেদনকারীদের নামও। ফলে ফের যে এই প্রকল্পের উপভোক্তা বাড়তে চলেছে, সে বিষসে সন্দেহ নেই। তাহলে কি আগামী দিনে ভাতা বাড়ানোর বিষয়টাই বুঝিয়ে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী? এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে সর্বস্তরে। বর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পান প্রায় ২ কোটি ২১ লক্ষ মহিলা। ২০২১’এর বিধানসভা ভোটের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সেই বছরই সেপ্টেম্বর থেকে নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের টাকা পেতে শুরু করেন উপভোক্তারা। ওয়াকিবহাল মহলের খবর, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে যদি তিনি নতুন করে কিছু বিবেচনা করেন, এটাও তার অন্যতম কারণ। মুখ্যমন্ত্রী জানেন, আকাশছোঁয়া খাদ্যপণ্যের বাজারে মানুষের হাতে টাকার জোগান দিতেই হবে। আর সেই দায়িত্ব তাঁর প্রতিপক্ষ অস্বীকার করতে পারে, তিনি কখনওই করেন না। আরজি করে তরুণী চিকিত্‍সককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সোমবার সাজা ঘোষণা হয়েছে ঘটনার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইয়ের। ফাঁসি নয়, যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে অভিযুক্ত সঞ্জয়ের। সাজা ঘোষণার পরই মুখ‍্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন রায় তাঁর পছন্দ হয়নি। এদিন মালদহের সভায় ফের আরজি করের রায় প্রসঙ্গে উষ্ণা প্রকাশ করেন মুখ‍্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ওবিসি নিয়ে লড়ে যাচ্ছি, লড়ে নেব। আপনারা জিতবেন। আমরা যে কেস নিই, যে কথা প্রথম বার বলি, সেটা নিয়েই থাকি। দেখলেন তো আরজি কর। কেউ যদি দানবিক, পৈশাচিক হয় তার জন্য কি করে মানবিক হয়। যে অন্যায় করল তাকে কি করে ক্ষমা করব। আমি শকড্। আমরা প্রথম দিন থেকেই ফাঁসি চেয়েছি। জাজমেন্ট আমার প্রথম পছন্দ হয়নি। হ্যাঁ এটা সংবেদনশীল বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা। ভাইদের দায়িত্ব দিচ্ছি বোনেদের দেখে রাখবেন। বোনেদের বলব কোথাও কিছু দেখলে পুলিশকে জানাবেন।’’