কলকাতা

বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগত প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর

আজ রাত পোহালেই শুরু হয়ে যাবে ষষ্ঠ বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন। ২০১৯ সালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন এবার থেকে প্রতি দুই বছর অন্তর বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই হিসাবে ২০২১ সালেই এই সম্মেলন আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে তা চলতি বছরে আয়োজিত হয়েছে। আগামিকাল থেকে কলকাতা লাগোয়া নিউটাউনে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে শুরু হচ্ছে দুই দিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ইতিমধ্যেই ৩৫টি দেশের প্রায় ৪৫০০ প্রতিনিধি কলকাতায় চলে এসেছেন বা এদিন রাতের মধ্যেই পৌঁছে যাচ্ছেন। এই সম্মেলনে যাতে তাই কোনও খামতি না থাকে তার জন্য আগামী দুই দিন নিউটাউনেই কার্যত ঘাঁটি গাড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইকো পার্কের একটি কটেজে এই দুই দিন থাকবেন তিনি। সেখান থেকেই গোটা সম্মেলন পরিচালনা করবেন তিনি।  তবে তার আগেই এদিন বিকালেই তিনি চলে যান বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে। সেখানে তিনি সম্মেলনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি মুখোমুখি বৈঠক সারেন জাপান, বাংলাদেশ ও কেনিয়ার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে। বৈঠকে অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা তথা রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী নিজে দেশ-বিদেশ থেকে আসা শিল্পপতি, উদ্যোগপতি এবং অন্যান্য অতিথির দেখভাল কেমন হবে, কোভিড বিধি যাতে ঠিকঠাক মেনে চলা হয়, নিরাপত্তায় যেন কোনও খামতি না থাকে— এই সমস্ত ব্যাপারে খতিয়ে দেখছেন। ঘটনাচক্রে এই সম্মেলন চলার জন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে এদিন থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হচ্ছে ইকোপার্ক। সেই ইকোপার্কের কটেজে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী সম্মেলনের পুরো বিষয়টি দেখভাল করবেন বলেই জানা গিয়েছে।

জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ও দেশকে যে বিকল্প অর্থনীতির রাস্তা দেখাতে পেরেছেন যা নিয়ে দেশজুড়ে বিগত কয়েক বছর ধরেই চর্চা বেড়ে চলেছে সেই অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ রাজ্যের চালু আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলিকে এই সম্মেলনে দেশ বিদেশের প্রতিনিধি ও শিল্পপতিদের সামনে তুলে ধরতে চাইছেন। সেই কারণেই আগামিকাল সম্মেলনের মূল মঞ্চে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বেশ কিছু উপভোক্তাকে রাজ্যের তরফে দেশ বিদেশের প্রতিনিধি ও শিল্পপতিদের সামনে হাজির করানো হবে। কীভাবে রাজ্যের আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলির মাধ্যমে তাঁদের জীবনে আয় বৃদ্ধি ঘটেছে ও তার জেরে কীভাবে রাজ্যের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটেছে তার ব্যাখাও দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই সেই সব উপভোক্তাদের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের তরফে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

একই সঙ্গে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রমজান মাস চলায় শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষায় নজরদারিতে জেলার মন্ত্রীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজের এলাকায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে নির্দিষ্ট কয়েকজনকেই শুধু থাকতে বলা হয়েছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা ও রাজ্যের উন্নয়নসূচককে সামনে আনছে রাজ্য। তাজপুর সমুদ্র বন্দর ও দেউচা পাঁচামির কথা রাজ্য বিশ্বের প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরতে চায়। তবে এবারের সম্মেলনে সবার নজর থাকবে আদানি গোষ্ঠীর প্রধান গৌতম আদানির দিকে। বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই শিল্পপতি বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মধ্যমণি হতে পারেন। জানা গিয়েছে, বেলুড়ে আদানি গোষ্ঠী একটি লজিস্টিক হাব তৈরি করতে পারে। বুধবার বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হতে চলা সম্মেলনে এই সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।