কলকাতা

সরকারি অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান কাণ্ডে কাঠগড়ায় পূর্ব রেলের সিপিআরও এবং ডিআরএম!

বন্দে-ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছিল হাওড়া স্টেশন। আসার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। কিন্তু মাতৃবিয়োগের জন্য তিনি আসতে পারেননি। কিন্তু এসেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁকে দেখেই বিজেপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা যে ভাবে ‘জয় শ্রীরাম শ্লোগান’ দিতে শুরু করেন তার জেরে রীতিমত ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের মঞ্চেই ওঠেননি তিনি সেই ঘটনার জেরে। এতেই কার্যত গোটা ঘটনাটি ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে। রেলমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী দলীয় নেতা থেকে কর্মী সমর্থকদের বার বার শ্লোগান থামাতে বললেও তাঁরা সে কথায় কর্ণপাত করেননি। আর তা দেখেই অনেকের ধারনা আগে থেকেই গোটা ঘটনার স্ক্রিপ্ট করে রাখা হয়েছিল ! আর তা করা হয়েছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার জন্যই। বঙ্গ বিজেপির নেতারাই সেই ঘটনায় জড়িত। রেলের এই অনুষ্ঠানে অতিথিদের আসনে কীভাবে নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের নেতা থেকে কর্মী ও সমর্থকদেরই আমন্ত্রণ জানানো হল সেই প্রশ্নই এখন উঠে গিয়েছে। আর সেখানেই বিতর্কের আঙুল উঠেছে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ও ডিআরএম’র দিকে। কেননা দুইজনই শুধু বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত তাই নয়, এই দুই জনের হাতেই ছিল অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্র বিলির কাজ।   বিজেপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের এহেন কাণ্ডে রীতিমত ক্ষুব্ধ হন রেলের আধিকারিকেরা। কেননা এদিনের অনুষ্ঠানটি ছিল সম্পূর্ণ ভাবে সরকারি অনুষ্ঠান ও রেলের অনুষ্ঠান। সেখানে কেন রাজনৈতিক শ্লোগান দেওয়া হল তা নিয়ে বিতর্ক যেমন বেঁধেছে তেমনি প্রশ্ন উঠেছে শুধুমাত্র বিজেপির কর্মী সমর্থদের হাতেই কেন পৌঁছেছিল এদিনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র। আর এই প্রশ্নের এখন বিদ্ধ হয়েছে পূর্ব রেলের সিপিআরও একলব্য চক্রবর্তী ও ডিআরএম মণীষ জৈন। শুক্রবারের এই শ্লোগান কাণ্ডের জেরে রেলের তরফে ইতিমধ্যেই নিজস্ব একটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  এর আগেও সরকারি মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে উঠেছিল ‘জয় শ্রীরাম’ রাজনৈতিক স্লোগান। নেতাজি জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য থামিয়ে দিয়েছিলেন  মুখ্যমন্ত্রী। তখনও বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব জবাব তলব করেছিল রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। বন্দে ভারত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা গেল রাজ্য বিজেপির অসৌজন্যের রাজনীতি। সরকারি মঞ্চে ফের মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে উঠল রাজনৈতিক স্লোগান ‘জয় শ্রীরাম’। বিজেপির একাংশের দাবি, সরকারি মঞ্চে রাজনৈতিক স্লোগান দেওয়া মোটেই ভালো চোখে দেখেননি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শুধু তাই নয়, শুক্রবার ভোরে প্রধানমন্ত্রীর মা প্রয়াত হয়েছেন। শোকে ভারাক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী। তা নিয়ে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই দুঃখের দিনেও কেন অসৌজন্যের রাজনীতি, তার জবাব তলব করা হয়েছে। প্রশ্ন, কেন সরকারি অনুষ্ঠানে থাকবে দলের পতাকা, উত্তরীয়? আরও বলা হয়েছে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বারবার না বলা সত্ত্বেও কেন অতি উৎসাহী বিজেপি কর্মীরা এই কাজ করলেন?