অপহরণের মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আক্রান্ত হল চোপড়া থানার পুলিস। বুধবার গভীর রাতে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া থানার আমতলা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা আচমকাই পুলিসের উপর চড়াও হয়। তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিসের উপর হামলা চালানোর সঙ্গে পাথর ছোড়ে বলে অভিযোগ। এতে চোপড়া থানার দুই পুলিস আধিকারিক ও পুলিস ভ্যানের চালক জখম হন। শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে জখমদের চিকিৎসা চলছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এলাকায় দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আমতলা এলাকার বাসিন্দা দিল মহম্মদের নামে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ আছে। দু’মাস পুলিস তার খোঁজ করছিল। বুধবার রাতে দিল মহম্মদ বাড়ি ফিরেছে বলে পুলিস জানতে পারে। তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য গভীর রাতে অভিযানে গেলে পরিবারের লোকজন বাধা দেওয়ার পর হামলা চালায়। এতে গুরুতর জখম হয়েছেন এসআই পবিত্র কুণ্ডু, এএসআই দেবাশিস পোদ্দার, পুলিস ভ্যানের চালক মহম্মদ সেলিম। চালক অবশ্য পুলিসে কর্মরত নন। তিনি চোপড়ার নয়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। এদিন দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে দিল মহম্মদের ছেলে, মেয়ে ও ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। বাকি হামলাকারীদের খোঁজে অভিযান চলছে। ইসলামপুর পুলিস জেলার এসপি জবি থমাস বলেন, অপহরণ ও মুক্তিপণ চাওয়ায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিস গিয়েছিল। কিন্তু তাঁদের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে। এতে দু’জন পুলিস আধিকারিক ও চালক জখম হয়েছেন। তাঁদের শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। তিনজনকে গ্রেপ্তার করে বাকিদের খোঁজে অভিযান চলছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর পুলিসের ধরপাকড়ের ভয়ে বেশিরভাগ লোকজন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কার্যত আমতলা গ্রাম পুরুষ শূন্য। স্থানীয় বাসিন্দা নুর ইসলাম বলেন, ঘটনার পর লাগাতার পুলিসের অভিযান চলছে। ভয়ে মানুষজন এলাকায় থাকছে না। অভিযুক্তদের সঙ্গে আমাদেরও পুলিস ধরতে পারে বলে আশঙ্কায় রয়েছি। এদিকে জখম চালকের ঘনিষ্ঠরা ধৃত মাজহার আলমের হাতিঘিষা মোড়ের দোকানে লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ। এবিষয়ে এসপি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখবেন। স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের হামিদুল রহমান বলেন, আগেও পুলিস অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু সফল হয়নি। অভিযুক্তের নামে একাধিক মামলা আছে। তাদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিস বাকিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুক। বাসিন্দারা বলছেন, চোপড়ায় পুলিসের উপর আক্রমণের ঘটনা অনেকবার ঘটেছে।