ক্রাইম

নাবালিকা ছাত্রীকে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত গৃহশিক্ষকের ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত

নাবালিকাকে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনায় গৃহশিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করল ঝাড়গ্রাম পকসো আদালত ৷ গৃহশিক্ষককে ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ৷ মঙ্গলবার ওই আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় সাজা ঘোষণা করেন । তদন্তকারীদের তৎপরতায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার বছর খানেকের মধ্যেই বিচার পেল নির্যাতিতা।পকসো আদালতের বিশেষ সরকারি আইনজীবী তপনকুমার চৌধুরী জানান, গৃহশিক্ষককে ২১ বছর কারাবাসের সাজার পাশাপাশি, ৬ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানাও করেছেন বিচারক । টাকা অনাদায়ে অতিরিক্ত ৩ মাস ১০ দিন কারাবাসের নির্দেশ হয়েছে । সরকারি আইনজীবী বলেন, অভিযোগ দায়ের হওয়ার একমাসের মধ্যে পুলিশ তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করেছিল ৷ উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে আদালতে পেশ করেছিল । সাক্ষীরা যাতে নির্ভয়ে সাক্ষ্যদান করতে পারেন সেটাও সুনিশ্চিত করা হয়েছিল । পুলিশের সক্রিয়তার জন্যই এক বছরের মধ্যে বিচার পেল নির্যাতিতা । সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষকের বাড়ি সাঁকরাইল থানা এলাকায়। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর নাবালিকার মা সাঁকরাইল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে ৷ সেখানেই উল্লেখ করেন, তাঁর ১৪ বছরের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী । ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সে ওই শিক্ষকের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যেত । ২০ ডিসেম্বর শিক্ষক ওই নাবালিকার মাকে ফোন করে জানায় তার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে । কেশিয়াড়ির একটি নার্সিংহোমে নাবালিকাকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেয় সে । পরে নাবালিকা তার মাকে জানায়, বাড়িতে একলা পেয়ে শিক্ষক নিয়মিত তাকে ধর্ষণ করত। ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবির ভিডিও করে রাখত । কাউকে বললে গোপন ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করে দেওয়ার ভয় দেখাত । এরপরই ২৪ ডিসেম্বর পুলিশের কাছে নাবালিকার মা অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগ দায়ের হতেই শিক্ষক ফেরার হয়ে যায়। পরে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি মানিকপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় । নাবালিকার মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষা করানো হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয় নাবালিকা। আইনি পদ্ধতি মেনে নাবালিকার পরিবারের সম্মতিতে হাসপাতালে নাবালিকার গর্ভপাত করানো হয় । চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পকসো আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ । ধর্ষণ, ভীতি প্রদর্শন ও পকসো আইনের ৬ ধারায় চার্জগঠন করে মামলার বিচার শুরু হয় । ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। সোমবার শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করার পর মঙ্গলবার বিচারক সাজা ঘোষণা করলেন।