কলকাতা

‘আন্দোলনে অস্ত্র নিয়ে যেতে হবে, ভয় পেলে চলবে না’, অডিও প্রকাশ্যে আসতেই যুবভারতীর আশপাশে জমায়েত নিষিদ্ধ করল পুলিশ, আটক ৫

‘অস্ত্র নিয়ে যেতে হবে, ভয় পেলে চলবে না’- এমনই অডিয়ো শুনিয়ে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের আশপাশে জমায়েত নিষিদ্ধ করল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। রবিবার বিকেল চারটে থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি (যা ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারার সমতুল্য) করা হয়েছে। এমন সময় সেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যে সময় যুবভারতী চত্বরে মিছিল করার কথা ছিল মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ‘জাস্টিস’ চেয়ে বিকেল পাঁচটা থেকে সেই মিছিল শুরু হওয়ার কথা আছে। কিন্তু তার আগেই জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যুবভারতী চত্বরে প্রচুর পুলিশ অফিসার মোতায়েন করেছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। নামানো হয়েছে র‍্যাফ। সাংবাদিক বৈঠকে দু’টি অডিও রেকর্ডিং শোনান তাঁরা, যার সত্যতা যাচাই করেনি বঙ্গনিউজ। ওই অডিও রেকর্ডিংয়ের কথোপকথন খানিকটা এমন- কণ্ঠ ১) ‘যত ছেলে, যখন হাতে অস্ত্র নেবে না! হাতে অস্ত্র মানে বুঝে নাও। তখন দেখবে এই যে পুলিশ বাড়াবাড়ি করছে না! সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। ওরা লাঠি চালাবে, আমরা চালাব অস্ত্র। দেখি কার জয়….ঠিক আছে! অস্ত্র নিয়ে যেতে হবে। ভয় পেলে চলবে না। 

বিধাননগর কমিশনারেট জানিয়েছে, ডুরান্ড ডার্বিতে অশান্তির বাধানোর চক্রান্ত করা হচ্ছিল। দর্শকদের মধ্যে মিশে গিয়ে অশান্তির ছক করা হয়েছিল। এমন বেশ কয়েকটি অডিও ক্লিপ তাদের হাতে এসেছে। গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত সেই নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। কমিশনারেটের আধিকারিকরা বলেন, “শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে কোনও সমস্যা নেই আমাদের। কিন্তু আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে যে, অশান্তি তৈরির চেষ্টা হবে। সেই কারণে জমায়েত না করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। যুবভারতী চত্বরে জারি করা হয়েছে ন্যায় সংহিতার ১৬২ ধারা (আগে যা ফৌজদারি বিধির ১৪৪ ধারা ছিল)।পুলিশ আধিকারিক বলেন, “সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে গিয়ে কিছু সংগঠন এবং লোকজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে বলে সুনির্দিষ্ট তথ্য আসে আমাদের কাছে। তাই ফুটবলপ্রেমী ৬২-৬৩ হাজার মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে পদক্ষেপ করতে হয় আমাদের। তাই বাতিল করতে হয় ম্যাচ। বহু মানুষ স্টেডিয়ামের বাইরে বিক্ষোভ করতে আসছে বলে জেনেছি। কিন্তু আজও আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, আজও বিশৃঙ্খলার তৈরির চেষ্টা করতে পারেন। অনেকেই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে আসছেন, কিন্তু কিছু বিশৃঙ্খল লোকজন ঢুকতে চলেছেন তার মধ্যে। এমন বহু তথ্য হাতে এসেছে আমাদের। তদন্তের স্বার্থে সব প্রকাশ করতে পারছি না। পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে, রাকেশ পাল, শুভম চক্রবর্তী, রজত নন্দী, সাগ্নিক গুহ এবং অনীশ দত্ত। এঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর কে কে যুক্ত রয়েছেন, জানার চেষ্টা করছি আমরা। আরও বেশ কয়েক জনকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।” কিছু সংগঠন এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল এবং আজ ডার্বি হলে হিংসা ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল বলে দাবি পুলিশের।