কলকাতা পুজো

বাংলায় এবার তৈরি হবে ‘দুর্গা অঙ্গন’, মন্ত্রিসভায় মিলল অনুমোদন

দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের পর এবার তৈরি হতে চলেছে ‘দুর্গা অঙ্গন’। আজ তাতেই পড়েছে সরকারি সিলমোহর। নবান্নে আয়োজিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাতেই দেওয়া হয়েছে সম্মতি। জানা গিয়েছে, পর্যটন দফতর এবং হিডকো যৌথ ভাবে ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরির কাজ করবে। নির্মাণের জন্য একটি ট্রাস্ট গঠন করার কথাও ঘোষণা করেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তবে মন্দির কোথায় তৈরি হবে বা এই নির্মাণকাজের জন্য কত টাকা বাজেট রয়েছে, সেই নিয়ে এখনও কিছুই জানা যায়নি নবান্ন। উল্লেখ্য, গত ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এই ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরির কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেদিন তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেছিলেন, “একমাত্র ভোটের সময়েই কি আপনাদের কালী-দুর্গার কথা মনে পড়ে?” তারপরই তাঁর মুখে শোনা যায়, “জগন্নাথ ধামের মতোই আগামী দিনে দুর্গা অঙ্গন নির্মাণ হবে বাংলায়।” এবার সেই ‘দুর্গা অঙ্গন’ নির্মাণের কাজেই পড়ল সরকারি সিলমোহর।

এদিন অরূপ বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রাজ্যে দুর্গাঙ্গন হবে এবং সেটা হচ্ছে । মুখ্যমন্ত্রী যা বলেন তা করেন । এই প্রকল্পের লক্ষ্য শুধু স্থাপত্য নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ এবং বিশ্বমঞ্চে দুর্গাপুজোর মর্যাদা আরও বাড়ানো ।” দুর্গাপুজো বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব । পালাবদলের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু রাজ্যের পুজো উদযাপনকে নতুন মাত্রা দেননি, বরং কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন স্থানে পুজো কার্নিভালের সূচনা করেছেন ৷ যা ইতিমধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে । 2021 সালে ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে Intangible Cultural Heritage বা অমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয় । মন্ত্রীর মতে, এই স্বীকৃতির মর্যাদা রক্ষাতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই নতুন পরিকল্পনা । সরকারের দাবি, দুর্গাঙ্গন শুধু একটি স্থাপনা নয়—এটি হবে বাঙালির উৎসব, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্থায়ী ঠিকানা । রাজ্য সরকারের আশা, এই কেন্দ্র দেশ-বিদেশের পর্যটক টানবে এবং দুর্গাপুজোকে ঘিরে রাজ্যের অর্থনীতি ও পর্যটন শিল্পকে নতুন গতি দেবে । এছাড়া সোমবারের মন্ত্রিসভায় আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, এক কাঠারও কম জমিতে বাড়ি নির্মাণের অনুমতি দিতে বিশেষ আইন আনা হবে ৷ যাতে গরিব মানুষও নিজেদের পাকাবাড়ির স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন । ছোট জমিতে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে পুরসভা তদন্ত সাপেক্ষে ছাড় দেবে । রাজ্যে কর্মসংস্থান বাড়ানোর দিকেও জোর দেওয়া হয়েছে । স্বাস্থ্য দফতরে সর্বাধিক নিয়োগ হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে । মোট ৬৩২টি শূন্যপদ পূরণ করা হবে বিভিন্ন দফতরে, যার মধ্যে আইন ও আবাসন দফতরও রয়েছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বারোয়ারী দুর্গাপুজো কমিটিগুলির আর্থিক অনুদান 85 হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেছেন । এছাড়া বিদ্যুৎ ও দমকল বিভাগ-সহ পুজো কমিটিগুলিকে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে ।