মালদা

ঘূর্ণিঝড় ফেনির প্রভাবে বৃষ্টিতে উপকৃত লিচু চাষিরা

হক জাফর ইমাম, মালদাঃ ঘূর্ণিঝড় ফেনি বহু মানুষের কাছে ক্ষতির কারণ হয়ে উঠলেও, ফনির প্রভাবে বৃষ্টিতে উপকৃত মালদার লিচু চাষিরা। প্রখর রোদের কারণে লিচুর ফলনে পচন দেখা দিতে শুরু করেছিল।  কিন্তু দুদিনের ঝড়ো হাওয়া এবং টানা বৃষ্টিতে সেই ছত্রাক জাতীয় রোগ পোকার আক্রমণ একেবারে দূর হয়ে গিয়েছে।  যার ফলে মালদার লিচু চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।  এবারে লিচুর ফলন ভালো হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন জেলার চাষীরা।  আর্থিক দিক দিয়েও লাভের অংকটা বেশ ভালো হবে বলেই এখন থেকে আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন মালদার লিচু চাষীরা। উদ্যানপালন দপ্তরের উপ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানিয়েছেন,  মালদা জেলায় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়ে থাকে।  কালিয়াচক ১,২,৩ ব্লকে লিচু সব থেকে বেশি চাষ হয় । এছাড়াও ইংরেজবাজার, রতুয়া ১,২ ব্লকের লিচু চাষ হয়ে থাকে । এবছর প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যা গতবারের থেকে অনেকটাই বেশি। গত বছর ১০ হাজার মেট্রিকটন লিচু উৎপাদন হয়েছিল জেলায়। কিন্তু এবারে ফেনির জন্য যে বৃষ্টির হয়েছে।  তাতে লিচুর ফলনের গোড়া শক্ত হয়েছে। উৎপাদনের মাত্রা অনেকটাই বাড়িয়ে দিবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কালিয়াচক ৩ ব্লকের কুম্ভিরা গ্রামের লিচু চাষি আহমেদ হোসেন , বদরুদ্দীন বিশ্বাস, খুরশেদ আলম জানিয়েছেন,এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে প্রখর রোদের তাপ শুরু হয়েছে। লিচু গাছে ফল ধরতে শুরু করেছে। এখন সবুজ ও মাঝারি অবস্থায় লিচু রয়েছে । এরই মধ্যে প্রখর দাবদহের কারণে লিচুর ফলনে গোড়া পচা রোগ শুরু হয়েছিল।  ফলের গোড়া কালো হয়ে ঝরে পড়ছিল। এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন চাষিরা। অনেকেই বাগানে রাতদিন এক করে স্প্রে করা শুরু করেছিলেন।  কিন্তু তাতে যথেষ্ট সমস্যার সমাধান হচ্ছিল না। তবে হঠাৎ করে ঝড়ের মধ্যেই বৃষ্টিতে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। মালদায় ঝড়ের প্রকোপ না থাকলেও দুদিনের অঝোরে বৃষ্টিতে লিচুর ফলন রোগপোকার দূর হয়েছে। এই বৃষ্টিতে আর ছত্রাকজাতীয় রোগের আক্রমণ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে । লিচুর গোড়া শক্ত হয়ে গিয়েছে। এমনকি লিচু খুব সুন্দর হবে। ফণী ঝড় লিচু চাষিদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,  এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ‘আরলি গুটি’ জাতের লিচু চাষ ভালো হয়েছে । মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে এই লিচু বাজারে চলে আসবে। এছাড়াও ‘আর্লি বোম্বাই ‘ জাতের লিচু কয়েকদিন পরেই বাজারে নেমে যাবে। উদ্যানপালন দপ্তরের মালদার উপ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানিয়েছেন,  এবছর ৯০ শতাংশ লিচুর বাগানে ফলন এসেছে । আবহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে লিচু চাষিরা ভালো লাভ করতে পারবেন । দু’দিনের বৃষ্টিতে রোগ পোকার আক্রমণ অনেকটাই দূর হয়েছে। তবে এবছর মালদা লিচু বাইরে রপ্তানি করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।