দেশ

অন্ধ্রপ্রদেশের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রীদের হস্টেলে শৌচাগারে গোপন ক্যামেরা

ছাত্রীদের হস্টেলের শৌচাগারে গোপন ক্যামেরা! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ঘিরে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তাল হল অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা জেলার গুড়লাভাল্লেরু ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।  ছাত্রীদের অভিযোগ, গোপন ক্যামেরায় ভিডিও রেকর্ড করে তা বাইরে বিক্রি করা হতো। এমনভাবে কয়েকশো ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে। আর এই ঘটনায় জড়িত কলেজেরই দুই ছাত্র। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই তড়িঘড়ি পুলিসকে তদন্তের নির্দেশ দেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। নির্দেশ পাওয়ার পরই ক্যাম্পাসে গিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিস। এক ছাত্রকে গ্রেপ্তারও করা হয়। তিনি বি-টেকের ফাইনাল ইয়ারের পড়ুয়া। তাঁর মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হলেও তা থেকে কোনও আপত্তিকর ভিডিও বা ছবি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এমনকী, শৌচাগারেও কোনও গোপন ক্যামেরা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তদন্তকারীদের এই দাবি মানতে নারাজ পড়ুয়ারা। ছাত্রীরা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগেই তাঁরা গোপন ক্যামেরার বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানান। কিন্তু কলেজের অধ্যক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি। বুধবার তাঁরা ফের অভিযোগ জানাতে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য একমাস সময় লাগবে। রাতারাতি গোপন ক্যামেরার বিষয়টিকে ‘ভুয়ো’ বলে কেউ কেউ প্রচার শুরু করেন বলেও দাবি ছাত্রীদের। এর পরেই বৃহস্পতিবার রাত দশটা থেকে ঘটনার তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন হস্টেলের ছাত্রীরা। দ্রুত তদন্তের দাবি তোলেন শিক্ষকরাও। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। তাদের দাবি, পুলিসের সঙ্গে মিলে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী নারা লোকেশ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভাঙ্গালাপুরি অনিতাও পুলিসকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তড়িঘড়ি এক মন্ত্রী, জেলাশাসক ও পুলিস সুপারকে কলেজ ক্যাম্পাসে যাওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। লোকেশ এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘গোপন ক্যামেরার অভিযোগ নিয়ে আমি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।  কোনও কলেজে যাতে এমন ধরনের ঘটনা না ঘটে, তাও নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।’
কৃষ্ণা জেলার পুলিস সুপার আর গঙ্গাধর রাও বলেন, ‘আমরা ছাত্রীদের হোস্টেলে কোনও গোপন ক্যামেরা পাইনি। বিক্ষোভকারী পড়ুয়া ও কলেজের কর্মীদের সামনেই ওই ছাত্রের ল্যাপটপ, মোবাইল ও অন্যান্য গ্যাজেট পরীক্ষা করে দেখা হয়। কোনও ভিডিও পাওয়া যায়নি। ছাত্রীদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।’ ঘটনার তদন্ত চলছে বলেও জানান পুলিস সুপার।