পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে বড়সড় ধাক্কা খেয়ে গেল গেরুয়া শিবির। ধাক্কা খেল অসাংবিধানিক পদক্ষেপ। গত ১২ জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁরা পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে। সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন গিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানেই শুক্রবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ জানিয়ে দেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও পর্যবেক্ষক নামাতে পারবে না। পর্যবেক্ষক নামানোর ক্ষমতা সাংবিধানিক ভাবে দেওয়া আছে শুধুমাত্র জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যের নির্বাচন কমিশনগুলিকে। নির্বাচনের কাজে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে পর্যবেক্ষম নামামোর কোনও ক্ষমতা দেওয়া হয়নি সংবিধানের মাধ্যমে। এই পদক্ষেপ গৃহীত হলে তা অসাংবিধানিক হিসাবেই চিহ্নিত হবে। বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে নির্বাচনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তকে মোটেও ভালভাবে নেয়নি রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের কাজে নজরদারি করার জন্যই এই পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কার্যত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মাধ্যমে বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার ফন্দি এঁটেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল ও সরকার। অন্যদিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় মূলত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক্তিয়ার নিয়ে। তাঁদের যুক্তি ছিল, একটি বিধিবদ্ধ সংস্থার ওপর আরেকটি বিধিবদ্ধ সংস্থা এভাবে নজরদারি করতে পারে না। নির্বাচনে যেকোনও ধরনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা একমাত্র নির্বাচন কমিশনের আছে। নিয়ম না মেনেই পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এই মামলার শুনানি শেষে এদিন হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে কোনও পর্যবেক্ষক নামাতে পারবে না। তবে সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রায়কে কলকাতা হাইকোর্টেরই ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ জানাতে চলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। প্রয়োজনে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টেও যেতে প্রস্তুত।