ক্রাইম

ভারতীয় বায়ুসেনার মহিলা ফ্লাইং অফিসারকে লাগাতার ধর্ষণে অভিযুক্ত বায়ুসেনার কর্মরত উইং কম্যান্ডার

মহিলাদের উপরে নির্যাতনের ঘটনা প্রতিদিনই একের পর এক ভয়াবহ ঘটনা সামনে আসছে। এই আবহে মঙ্গলবার সামনে এসেছে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, বায়ুসেনার কর্মরত এক উইং কম্যান্ডার তাঁরই সহকর্মী এক মহিলা ফ্লাইং অফিসারকে লাগাতার ধর্ষণ করেছেন৷ সেই অফিসার উইং কম্যান্ডারের বিরুদ্ধে পুলিশে এফআইআর দায়ের করেছেন। কাশ্মীরের বদগাম থানায় দায়ের করা হয়েছে এই এফআইআর৷ কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে তদন্তও৷ বায়ুসেনা সূত্রের দাবি, পুলিশি তদন্তে তাঁরা পূর্ণ সহযোগিতা করছেন৷ওই মহিলা ফ্লাইয়িং অফিসার তাঁর এফআইআর-এ জানিয়েছেন, গত দু’বছর ধরে তাঁকে ধর্ষণ, যৌন হেনস্থা এবং মানসিক নির্যাতন করেছেন অভিযুক্ত উইং কম্যান্ডার৷ তাঁর অভিযোগ, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণের রাতে নিজের ফ্ল্যাটে ওই মহিলাকে যৌন হেনস্থা করেন উইং কমান্ডার৷ মহিলার দাবি, উইং কম্যান্ডার তাঁকে জিজ্ঞেস করেন যে তিনি ‘গিফ্ট’ পেয়েছেন কি না। তরুণী জানান, তেমন কিছু তিনি পাননি। ফলে ওই মহিলা অফিসারকে তিনি বলেন যে তাঁর সঙ্গে যেতে যেখানে গিফ্ট রাখা আছে।তরুণীর বক্তব্য, ‘আমি গিয়ে দেখি যে অফিসারের ফ্যামিলি সেখানে নেই। আমার উপর তখনই ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। তিনি আমাকে বারবার ধর্ষণ করেন ও ওরাল সেক্সে বাধ্য করেন! আমি নানা ভাবে প্রতিহত করতে চেয়েও পারিনি। পরে সর্বশক্তি দিয়ে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাই।’পর দিনই নিগৃহীতা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালেও কোনও ফল হয়নি, এমনকি তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হয়েছে দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ার পরে বলে দাবি তাঁর। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রভাব খাটিয়ে ওই উইং কম্যান্ডার অভিযোগকারিণীর মেডিক্যাল টেস্ট করাতে দেরি করান। বরং অভিযুক্ত অফিসার তাঁর অফিসে এসে হাজির হতেন যেন কিছুই হয়নি! ওই ফ্লাইং অফিসারের দাবি, বহু দিন পরে সংশ্লিষ্ট উইং কম্যান্ডারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হলেও কিছু দিনের মধ্যেই তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি বারবার তদন্তের অনুরোধ করলেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ এই তরুণীর। হতাশ হয়ে বিশাখা কমিটির (আইসিসি) কাছে দ্বিতীয় বার তিনি অভিযোগ জানালেও কিছু হয়নি, বরং একজন যৌন নিগ্রহকারীকে ‘নিরাপত্তা’ দেওয়া হয়েছে ও কমিটিকে ‘নিউট্রাল’ রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে বলে দাবি। তাঁর অভিযোগ, ওই কমিটি নাকি বলে, কোনও ‘প্রত্যক্ষ প্রমাণ’ পাওয়া যায়নি তাই তারা কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি। তরুণী তাঁর এফআইআরে প্রশ্ন তুলেছেন, কোন যৌন নিগ্রহকারী ‘প্রত্যক্ষ প্রমাণ’ রেখে ধর্ষণ বা নিগ্রহ করেন? মহিলার অভিযোগ, এখানেই না থেমে এই ঘটনার পর থেকে তাঁর প্রতিদিনের গতিবিধি এমনকি মোবাইল ব্যবহার এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-র সাইটে তিনি কী মন্তব্য করছেন তার উপরেও লাগাতার নজরদারি চালানো হয়েছে। তিনি বারবার ছুটি চাইলেও তাঁর ছুটি মঞ্জুর করা হয়নি বা বদলির অনুরোধও খারিজ করা হয়েছে। ওই অবিবাহিত তরুণী জানান, গোটা ঘটনায় তিনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ ভেবেছিলেন আত্মহত্যার কথাও। পরে সিনিয়র মহিলা অফিসারদের পরামর্শে তিনি পুলিশের কাছে সব ঘটনা উল্লেখ করে এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নেন।