দেশ

শততম উপগ্রহ উৎক্ষেপণে নজির গড়ল ইসরো

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণায় ইতিহাস ৷ বুধবার সকালে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্র থেকে শততম উপগ্রহ উৎক্ষেপণে নজির গড়ল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) ৷ 46 বছর আগে অর্থাৎ 10 অগস্ট, 1979 শ্রীহরিকোটা থেকে প্রথম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরো। দেশীয় ক্রায়োজেনিক্স প্রযুক্তিতে তৈরি ত্রিস্তরীয় রকেট জিওসিঙ্ক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল (জিএসএলভি)-এফ15 কক্ষপথে স্থাপন করে এনভিএস-02-কে । সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্রের দ্বিতীয় লঞ্চ প্যাড থেকে আজ সকাল 6.23 মিনিটে এই শততম উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপণ হয় । এটি একটি উন্নত ন্যাভিগেশন উপগ্রহ ৷ যা স্থলজ, আকাশ ও সামুদ্রিক ন্যাভিগেশন এবং নির্ভুল কৃষিতে সহায়তা করবে । এটি ছিল ইসরো চেয়ারম্যান ভি নারায়ণনের নেতৃত্বে প্রথম উপগ্রহ উৎক্ষেপেণ ৷ শততম সফল উৎক্ষেপণের পর ভি নারায়ণন বলেন, “2025 সালে ইসরোর প্রথম উদ্যোগ সফল ঘোষণা করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ৷ উপগ্রহটিকে প্রয়োজনীয় (GTO) কক্ষপথে সঠিকভাবে প্রবেশ করানো গিয়েছে ৷ এটি শততম উৎক্ষেপণ, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকও ৷” এই মিশনে তথ্য এসেছে এবং সমস্ত যানবাহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান ইসরো চেয়ারম্যান ৷ এর আগে 2023 সালের 29 মে জিএসএলভি)-এফ-15 উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরো। 14 জানুয়ারি ইসরোর চেয়ারম্যানের পদ থেকে অবসর নেন এস সোমনাথ। তাঁর স্থানে দায়িত্ব নেন ভি নারায়ণন। 16 জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি ৷ এর আগে লিকুইড প্রোপালশন সিস্টেম সেন্টারের ডিরেক্টর পদে ছিলেন নারায়ণন। 1984 সালে ইসরোতে যোগ দেওয়া এই বিজ্ঞানীর রকেট ও মহাকাশযান পরিচালনায় 40 বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। অন্ধকার ও মেঘলা আকাশের কারণে প্রায় 19 মিনিট পর রকেটটি সফলভাবে তার পেলোড NVS-02 নেভিগেশন স্যাটেলাইটকে জিওসিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সফার অরবিট (GTO) থেকে আলাদা করে । ISRO জানিয়েছে, NVs-02 স্যাটেলাইটের মূল লক্ষ্য হল স্থলজ, আকাশ এবং সামুদ্রিক নেভিগেশন, নির্ভুল কৃষি, মোবাইল ডিভাইসে অবস্থান ভিত্তিক পরিষেবা, উপগ্রহের কক্ষপথ নির্ধারণ, ইন্টারনেট-অফ-থিংস (IoT) ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন নির্ধারণ করা । বেঙ্গালুরুর ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারে ডিজাইন ও বিকশিত হওয়া NVS-02 স্যাটেলাইটটির ওজন প্রায় 2,250 কেজি । L1, L5 এবং S ব্যান্ডের নেভিগেশন পেলোড রয়েছে এবং একটি ট্রাই-ব্যান্ড অ্যান্টেনা ব্যবহার করা হয়েছে। নেভিগেশন পেলোডের মূল হল রুবিডিয়াম অ্যাটমিক ফ্রিকোয়েন্সি স্ট্যান্ডার্ড (RAFS), একটি পারমাণবিক ঘড়ি যা নেভিগেশন পেলোডের জন্য একটি স্থিতিশীল ফ্রিকোয়েন্সি রেফারেন্স হিসেবে কাজ করে । রেঞ্জিং পেলোডে একটি CxC ট্রান্সপন্ডার থাকে যা দ্বিমুখী CDMA রেঞ্জিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয় যা সুনির্দিষ্ট কক্ষপথ নির্ধারণকে সহজতর করে বলে জানিয়েছে ইসরো ৷ ভি নারায়ণন ইসরোর যাত্রাপথের বিবরণ দিয়ে, কিংবদন্তি বিক্রম সারাভাইয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত মহাকাশ অভিযানের কথা স্মরণ করেন।