মুখ্যমন্ত্রীকে শো-কজ করেছিলেন রাজ্যপাল ৷ তার পালটা মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে রাজ্যপালের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করল রাজ্য সরকার ৷ পাশাপাশি শো-কজ নোটিশ প্রত্যাহারের কথাও বলা হয়েছে ৷ কর্ণাটকের রাজ্যপাল থাওয়ারচাঁদ গেহলত মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে একটি বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলেন ৷ তা প্রত্যাহার করার পরামর্শ দিয়েছে সরকার ৷ রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান মইসুরু আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (MUDA) সংক্রান্ত একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারপ্রক্রিয়ায় অনুমোদন দেওয়া হবে না কেন তা জানতে চান প্রশাসনিক প্রধানের কাছে। এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে রাজ্যপালের নোটিশ দেওয়া নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বৃহস্পতিবার দীর্ঘ আলোচনাও হয়। সেখানেই মইসুরু আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি সংক্রান্ত আইনি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ বৈঠকে রাজ্যপালের নোটিশ নিয়ে প্রতি তীব্র অসন্তোষও প্রকাশ করেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা ৷ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার জানান, রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত আদতে গণতন্ত্র ও সংবিধানকে হত্যার সামিল। একই সঙ্গে, মন্ত্রিসভা নোটিশ প্রত্যাহারের জন্য রাজ্যপালকে জোরালভাবে অনুরোধ করবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান শিবকুমার ৷তিনি বলেন, “একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে শো-কজের নোটিশ জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। রাজ্যের মানুষ কংগ্রেসকে 136টি আসন দিয়ে আশীর্বাদ করেছে। আমরা সংবিধানকে সম্মান করি। রাজ্যপাল একজন ব্যক্তিকে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রীকে শায়েস্তা করার চেষ্টা করছেন ৷” গত ২৬ জুলাই টিজে আব্রাহাম নামে এক ব্যক্তি রাজ্যপালের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেদিনই রাজ্যপাল সাতদিনের সময় দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীপর উদ্দেশে শো-কজ নোটিশ জারি করেন। টিজে আব্রাহাম ২০০টিরও বেশি পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে রাজ্যপাল কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন উপমুখ্যমন্ত্রী।শিবকুমার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এখানে তাঁর কোনও প্রভাবই কাজে লাগাননি ৷ আমরা আইনের কাঠামোর মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। এই বিষয়ে আদালতের অনেক রায় আছে। সে সবই রাজ্যপাল বিবেচনা করবেন। আমরা নিশ্চিত যে রাজ্যপাল, টিজে আব্রাহামের আবেদন প্রত্যাখ্যান করবেন এবং কারণ দর্শানোর নোটিশও প্রত্যাহার করবেন। রাজ্যপাল আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন ৷”গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন অংশে রাজ্য-রাজ্যপাল সম্পর্ক নিয়ে বারবার চর্চা হয়েছে ৷ বিশেষ করে বিজেপি বা তার শরিক দলের সরকার নেই এমন রাজ্যের রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলি ৷ পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত গোটা দেশের চর্চার বিষয় হয়েছে ৷ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা পর্যন্ত দায়ের করেছেন ৷ অন্যদিকে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলহতাহানির অভিযোগের দিকে দিগনির্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন, রাজভবনে যেতে মেয়েরা ভয় পাচ্ছে ৷ এবার রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আরও এক রূপ দেখল কর্ণাটক ৷ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে শো-কজের নোটিশ পাঠালেন রাজ্যপাল ৷