২০২৩-এ দেড়শো বছর পূর্ণ করতে চলেছে কলকাতার ট্রাম পরিষেবা ৷ তবে এত বছরেও নিজের গতি-প্রকৃতি খুব একটা পরিবর্তন হয়নি কলকাতার ট্রামের ৷ বিশেষত গতির সঙ্গে তাল মেলাতে না-পেরে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে দূষণহীন এই যান ৷ যা ট্রামের জন্য প্রধান আশঙ্কার কারণ ৷ কলকাতার ঐতিহ্য বললে প্রথম সারিতেই থাকবে ট্রামের কথা ৷ ১৫০ বছর ধরে এ শহরের সঙ্গে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়ে এই ট্রাম ৷ গতিতে ধীর হলেও শহরের বুকে এঁকেবেঁকে চলা এই যান নিয়ে বাড়তি গর্ব রয়েছে কলকাতাবাসীর । কারণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন হিসেবে ট্রাম পরিষেবা এখনও বহাল এ শহরে । তবে ধীর গতির কারণে কলকাতার ট্রাফিক সিস্টেমে ট্রাম সমস্যার সৃষ্টি করছে ৷ তার জেরে ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি রুট ৷ বৃহস্পতিবার রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিধানসভায় জানান, যানজট হয় এইরকম রাস্তায় ট্রাম চালাতে চায় না রাজ্য সরকার ৷ পরিবর্তে যে সকল রাস্তায় যানজট কম সেখানে ট্রাম চলবে ৷ তবে ট্রামের বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে ইলেকট্রিক বাসকে অথবা ট্রলিবাসকেই ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন মন্ত্রী ৷ শহরের যে রাস্তায় শ্লথ গতিতে ট্রাম চললেও কোনও সমস্যা হবে না সেই সমস্ত রাস্তায় হেরিটেজ হিসাবে ট্রাম চালানো হবে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ। বর্তমানে কলকাতায় রয়েছে ২৫২টি ট্রাম। তার মধ্যে ৪টি সিঙ্গল বগি এসি ট্রাম। আরও ৪টি সিঙ্গল বগি নন-এসি ট্রাম। আর বাকি ২৪৪টি হল ডবল বগি নন-এসি ট্রাম। বর্তমানে টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট-এসপ্ল্যানেড ও শ্যামবাজার-ধর্মতলা রুটেই চলছে ট্রাম। তবে পরিবহন দফতরের তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন ডিপোয় এই মুহূর্তে প্রায় ১৫০টি ট্রাম অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পাল্লা দিয়ে কমেছে ট্রামচালকের সংখ্যাও। বর্তমানে চালকের সংখ্যা কমতে কমতে এসে ঠেকেছে মাত্র ৬৫-তে ৷ যার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার কর্তাদেরই একাংশের আশঙ্কা, কয়েক বছর পরে কলকাতায় ট্রামচালক খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর হবে। ট্রামের বদলে মহানগরের বুকে আরও বেশি সংখ্যায় বৈদ্যুতিন বাস চলবে বলে জানিয়েছেন মেয়র। বর্তমানে ১০০টি বৈদ্যুতিন বাস বলে জানিয়েছেন তিনি। সামনের বছর আরও ৪০০টি বাস নামানো হবে বলেও জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী।