মহারাষ্ট্রে যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, তার মূলে ‘অপারেশন কমল’ ৷ মঙ্গলবার দিনভর নাটকের পর অন্তত তেমনটাই অভিযোগ শিবসেনা এবং কংগ্রেসের ৷ তবে এই সংকটের অভিঘাত যে এতোটা জোরাল হবে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি উদ্ধব ঠাকরে সরকার ৷ ‘বিদ্রোহী’ একনাথ শিন্ডে 22 জন বিধায়ককে নিয়ে সুরাতে গা-ঢাকা দিয়েছেন ৷ প্রাথমিকভাবে এমনটা মনে করা হলেও সময় যত যাচ্ছে তত স্পষ্ট হচ্ছে চিত্রটা ৷ আর বুধবার সকালে যে চিত্র সামনে এসেছে তাতে মহারাষ্ট্রে শিবসেনা, কংগ্রেস এবং এনসিপি-কে নিয়ে গঠিত ‘মহা বিকাশ আগাড়ি’ সরকার পতনের মুখে ৷ সমীকরণ বলছে, পশ্চিমের রাজ্যটিতে সরকার ফেলতে ‘বিদ্রোহী’ একনাথ শিন্ডের সমর্থনে ৩৭ জন শিবসেনা বিধায়ককে প্রয়োজন ৷ এদিন সকালে নেটদুনিয়ায় সামনে আসা ছবিতে দেখা যাচ্ছে শিন্ডের সমর্থনে একছাদের নীচে ৩৪ জন বিধায়ক রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৩২ জনই শিবসেনার ৷ বাকি দুই শিবসেনার শরিক দলের ৷ আর এই ছবি সামনে আসার পরই ‘আত্মারাম খাঁচাছাড়া’ শিবসেনার ৷ কারণ, ২৮৭ আসনে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৪৪টি আসন ৷ আর বিক্ষুব্ধ বিধায়করা যদি ইস্তফা দিয়ে দেন, তাহলে আখেরে লাভ বিজেপি’র ৷ এদিন গুয়াহাটিতে পৌঁছে একনাথ দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে অন্ততপক্ষে ‘বিক্ষুব্ধ’ ৪০ জন বিধায়ক রয়েছে ৷ যার মধ্যে ৩৩ জন শিবসেনা এবং বাকি ৭ জন অন্য দলের ৷ তাঁদের দাবি মেনে শিবসেনা যদি বিজেপি’র সঙ্গে জোট বাঁধে তো ভাল, নয়তো তাঁরা ‘হিন্দুত্ব’-এর পাশে দাঁড়াবেন ৷ একনাথ আবার শিবসেনার পরিষদীয় দলের দুই-তৃতীয়াংশ বিধায়ক জোগাড় না-করতে পারলে দলত্যাগ-বিরোধী আইনের আওতায় পড়ে যাবেন ৷ সেক্ষেত্রে একনাথের দরকার শিবসেনার ৩৭ জন বিধায়ক ৷ আর তাহলেই এই বিদ্রোহ মর্যাদা পাবে ৷ কিন্তু বুধবার ভাইরাল হওয়া ছবিতে মন্ত্রিসভার সদস্য শিন্ডের সমর্থনে ৩২ জন শিবসেনা বিধায়ককে দেখা গিয়েছে ৷ তাই এখনও তাঁর প্রয়োজন ৫ জন শিবসেনার পাঁচ বিধায়ক ৷ গাণিতিক সমীকরণে যদি চোখ রাখা যায় তাহলে দেখা যাবে, বিজেপির ঘরে বর্তমানে ১১৩ জন বিধায়ক রয়েছেন ৷ এর সঙ্গে শিন্ডে নেতৃত্বাধীন ৩৪ বিধায়কের শক্তি যদি যোগ হয়, তবে তা বেড়ে হবে ১৪৭ ৷ অর্থাৎ, সেক্ষেত্রে সরকার গড়তে কোনও অসুবিধা হবে না বিজেপি-র ৷