জেলা

‘এই মাটি গদ্দারদের কোনওদিন বিশ্বাস করে না’, পূর্ব মেদিনীপুরের থেকে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কয়েকমাস আগে কলকাতার রেড রোডে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে প্রাপ্য বকেয়ার দাবিতে ধর্নায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর স্লোগান ছিল, ‘ওহে নন্দলাল, হাজার টাকার গ্যাসে ফুটছে বিনা পয়সার চাল।’ সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে সেই স্লোগানের শুরুতে তিনি জুড়লেন আরও একটি শব্দ-‘গদ্দার’। হবে নাই বা কেন, লোকসভা ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে পারে আগামী সপ্তাহেই। তার আগে আবার শুরু হয়েছে দল ভাঙানোর ‘খেলা’। বিজেপির এই রণকৌশলের বিরুদ্ধে এদিন প্রশাসনিক সভা থেকেই গর্জে ওঠেন মমতা। তোপ দাগেন, ‘এই ভোট গদ্দারদের বিরুদ্ধে। এই মাটিতে ওদের কোনও স্থান নেই। এই ভোটে মানুষ গদ্দারদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে। ওদের পরাস্ত করবে।’ দলবদলু নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতার পরিবারের ‘খাসতালুক’ হিসেবে কার্যত পরিচিত তমলুক। তাই এদিন সেখানে দাঁড়িয়ে মমতা সরাসরি নিশানা করেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া দলবদলুদের। তাঁর আরও অভিযোগ, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য ইডি-সিবিআইকে দিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের ‘চমকানো হচ্ছে’।পরপর দু’দিন বাংলায় সভা করে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীকেও রেয়াত করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল, রাজ্যের মাটিতে দাঁড়িয়ে আবাস প্রকল্প নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। একেবারে সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর আনা লুটের তত্ত্ব খারিজ করেন তিনি। মমতা বলেন, আগামী দিনে সঠিক তথ্য না তুলে ধরতে পারলে মোদির উচিত বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া। বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে রাজ্যে এসে ভোট চাওয়া ‘দিল্লির বাবুদের’ এদিন কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে তিনি বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধের নেপথ্যে বেশ কিছু ‘গদ্দার’ সহ রাজ্য বিজেপির একাংশের উস্কানিকে দায়ী করেছিলেন। এদিনও সেই কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, ‘ওদের কথা বিশ্বাস করবেন না। বিশ্বাস করলেই ঠকবেন। ঠকবাজদের কথা শুনলে সবকিছু উজার হয়ে যাবে। আমরা কথা রাখতে জানি। আমরা করে দেখাই।’এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে নন্দীগ্রামের কথা। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘ওই মামলাটি এখনও বিচারাধীন রয়েছে। প্রায় আড়াই বছর হয়ে গেল। কী হয়েছিল, না হয়েছিল, সেটার উত্তর একদিন মানুষ দেবে।’ কারও নাম না করে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ‘মাথা’ হিসেবে মেদিনীপুরের এক ‘গদ্দার’-এর দিকে আঙুল তুলেছেন মমতা। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘চোরের মায়ের বড় গলা। পকেটমার দেখেছেন, যে পকেটমারি করে, সে-ই প্রথম চিৎকার করে। সবচেয়ে বড় পকেটমারি স্কুল এডুকেশনে কে করেছে, মেদিনীপুরের লোক ভুলে গিয়েছেন? আমি কারও চাকরি খাই না, খাবও না। তবে মাথাকে যে ছাড়ব না, এটা বলে দিচ্ছি।’