কলকাতা

ভোটের আগে মাস্টারস্ট্রোক! ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’, নয়া জনমুখী প্রকল্পের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

দুয়ারে সরকারের পরে এবার ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’। একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে নয়া আন্দোলনের ঘোষণার পরদিনই মঙ্গলবার নবান্নে নয়া সরকারি প্রকল্পের ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ, কেন্দ্র ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া আটকে রেখেছে । তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ৯৩টিরও বেশি জনমুখী প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে ৷ এই বার্তা দিয়েই এ দিন এই নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী । মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “কেন্দ্র বারবার আত্মনির্ভরতার কথা বলে । কিন্তু বাস্তবে রাজ্যকেই সবকিছু করতে হচ্ছে । আমরা কোনও কিছুতে পিছিয়ে নেই । এবার আমরা পথে নামব মানুষের ছোট ছোট সমস্যার সমাধানে ৷” নতুন এই কর্মসূচির নাম ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “অনেক সময় দেখা যায়, একটা জলের কল বসানো বা একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো দরকার – এরকম ছোট ছোট সমস্যা থেকে যায় । এই প্রকল্প সেই সমস্যাগুলোকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে ।” এই কর্মসূচির আওতায় রাজ্যের প্রায় আশি হাজার বুথ এলাকায় মাঠে নামবেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা । তিনটি বুথ মিলিয়ে এক একটি ইউনিট গঠন করা হবে । প্রতি ইউনিটে একদিন করে অবস্থান করবেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা । একাধিক দফতরের প্রতিনিধিরা থাকবেন সেই শিবিরে । স্থায়ীভাবে বসার জায়গা তৈরি করা হবে, যেখানে স্থানীয় মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন । প্রতিটি বুথের জন্য বরাদ্দ ১০ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ মোট খরচ আট হাজার কোটি টাকারও বেশি । মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এই প্রকল্প শুরু হবে আগামী ২ অগস্ট থেকে এবং প্রায় দু’মাস ধরে এটি চলবে । রাজ্যজুড়ে একটি সমন্বয়কারী টাস্ক ফোর্স গঠন করা হচ্ছে, যার নেতৃত্বে থাকবেন মুখ্যসচিব । জেলাস্তরে ও রাজ্যস্তরে পৃথক পৃথক টাস্ক ফোর্স তৈরি হবে । কর্মসূচির সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য পুলিশের সহায়তাও নেওয়া হবে । মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, “দুয়ারে সরকার যেমন মানুষের দরজায় পৌঁছেছিল, তেমনই এবার সরকার নিজে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে মানুষের মুশকিলের সমাধান করবে । গোটা দেশে এই ধরনের কর্মসূচি এই প্রথম । বাংলাই পথ দেখাবে ।” তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি শুরু হয়েছে । প্রতিটি বুথকে চিহ্নিত করে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে । শিবিরে মূলত পঞ্চায়েত, সেচ, বিদ্যুৎ, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা থাকবেন । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে গ্রামীণ এলাকার মানুষের সঙ্গে আরও নিবিড় সংযোগ গড়ে তুলতেই এই ধরনের জনমুখী প্রকল্পের ওপর জোর দিচ্ছে তৃণমূল । তবে সরকারি সূত্রের দাবি, এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য, পাড়ায় পাড়ায় প্রশাসনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং সরাসরি মানুষের সমস্যার মাটিতে দাঁড়িয়ে তার সমাধান করা ।”