কলকাতা

রবিবার পর্যন্ত পুলিশকে সময়, কিনারা না হলে আর জি কর কাণ্ডের তদন্তভার দেওয়া হবে সিবিআইকে: মুখ্যমন্ত্রী

নিহত ডাক্তারের বাড়িতে সোমবার সকালে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে জানালেন সমবেদনা। দ্রুত বিচারের আশ্বাসও দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন নির্যাতিতার বাড়ি থেকে বেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রবিবারের মধ্যে পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করতে না পারলে সিবিআইকে স্থানান্তরিত করা হবে।  আর জি কর কাণ্ডের কিনারা করার জন্য কলকাতা পুলিশকে আগামী রবিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রবিবারের মধ্যে পুলিশ এই তদন্তের কিনারা করতে না পারলে তদন্ত ভার সিবিআই-কে দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এ দিন সোদপুরে নিহত চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর এই সিদ্ধান্তে কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এ দিন দুপুরে সোদপুরে আর জি করের নিহত চিকিৎসকের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী৷ প্রায় আধ ঘণ্টা মৃতার বাবা মা সহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এর পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঘটনার দিন আমি ঝাড়গ্রামে ছিলাম৷ পুলিশ কমিশনার আমাকে ঘটনার কথা জানানোর পরই আমি বলি, এত ন্যক্কারজনক, বেদনাদায়ক ঘটনা৷ যেই দোষী হোক, তাকে ইমিডিয়েট শাস্তি দিতে হবে৷ আমরা এই মামলাটা ফাস্টট্র্যাক কোর্টে তুলব যাতে দ্রুত বিচার হয়৷ দোষীর ফাঁসি চাওয়া হবে৷ কিছু লোক এখনও সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যে আছে৷ মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া যে কত বড় অপরাধ, তার উপর এরকম অত্যাচার করেছি৷ ওখানে নার্সরা ছিলেন, হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষীরা ছিলেন, তার পরেও কীভাবে এই ঘটনা ঘটল আমি এখনও বুঝতে পারছি না৷’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওঁর (নিহত চিকিৎসক) বাবা মা আমাকে বললেন ভিতরের কেউ জড়িত আছে৷ যদি তাই হয় ওঁর বন্ধুবান্ধব সহ যাদের উপরেই সন্দেহ হচ্ছে তাঁদের ডেকে কথা বলা হবে৷ যিনি প্রথম বাড়িতে ফোন করে খবর দিয়েছিলেন, তাকেও ডাকা হবে৷ আমি চাই পুলিশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তদন্ত শেষ করুক৷ তার পরেও যদি রবিবার পর্যন্ত যদি তাঁরা কুলকিনারা করতে না পারেন, তাহলে এই কেসটা আমরা সিবিআইকে দিয়ে দেব৷ কারণ ভিতরেরও তো অনেকে আছে৷ আমি প্রথম থেকেই বলছি, এখানে আমাদের লেনাদেনা কিছু নেই৷’ কলকাতারর পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পাশে নিয়েই এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য তার পরেও কলকাতা পুলিশের তদন্তের উপরেই আস্থা রেখেছেন৷ তিনি বলেন, ‘কলকাতা পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া গোটা বিশ্বের মধ্যে সেরা৷ মমতা বলেন, সেরা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ তবু যদি পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে, তাই মানুষের সন্তুষ্টির জন্যই আমরা সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেব৷’ শুধু তাই নয়, সিঙ্গুরের তাপসী মালিকের ঘটনা, রিজওয়ানুর হত্যা মামলা, রবীন্দ্রনাথের নোবলে চুরির মতো একাধিক মামলার তদন্তে যে সিবিআই সাফল্য পায়নি, সেকথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি জুনিয়র চিকিৎসক এবং ডাক্তারি পড়ুয়াদের দাবি মেনে আর জি কর হাসপাতালের সুপার, অধ্যক্ষ, চেস্ট ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান সহ কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷