দেশ

‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র কায়দায় ‘লাডলি বহেন’? মমতার পথে হেঁটেই মধ্যপ্রদেশে বাজিমাত বিজেপির!

লাডলি বহেন যোজনা’য় মহিলাদের মাসিক এক হাজার টাকার বদলে তিন হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি৷ কন্যাসন্তানকে দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য, উজ্জ্বলা ও লাডলি বহেন যোজনার আওতায় থাকা পরিবারকে ৪৫০ টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার৷ একের পর এক মহিলামুখী প্রকল্প৷ একের পর এক প্রতিশ্রুতি। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশে বিজেপির এই বিপুল ভোট পাওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ অবশ্যই শিবরাজ সিং চৌহানের এই ঢালাও মহিলামুখী প্রকল্প এবং প্রতিশ্রুতি। এই নির্বাচনে কার্যত মধ্যপ্রদেশের মাটিতে কোনও দাগই কাটতে পারল না কমলনাথের কংগ্রেস৷ মধ্যপ্রদেশে দিনের শুরু থেকেই নিজের আধিপত্য বজায় রেখেছে শিবরাজ সিংহ চৌহানের বিজেপি৷ বর্তমানে ২৩০ আসনের বিধানসভা কেন্দ্রে ১৬১টি আসনে এগিয়ে তারা৷ কংগ্রেস এগিয়ে ৬৭টি আসনে৷ অন্যান্যরা ২টিতে৷ প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় শিবরাজ সিং চৌহান জানিয়েছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের স্ট্র্যাটেজি এবং জনমুখী প্রকল্পের জন্যই তাঁদের এই জয় এসেছে৷ আর হ্যাঁ, বহেন নে সাথ দিয়া.. (বোনেরাও পাশে থেকেছেন)৷ ’’ অর্থাৎ, মহিলাদের থেকে পাওয়া বিপুল ভোটও যে তাঁদের এই জয়ের অন্যতম কারণ, তা এককথায় স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রূপশ্রী৷ পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সমস্ত মহিলামুখী প্রকল্পগুলোকে এক সময় ‘রেউড়ি রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করেছিল বিজেপি৷ অথচ, মধ্যপ্রদেশে এই মহিলামুখী প্রকল্পই শিবরাজের ফেরার পথ প্রশস্ত করে দিল বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। বাংলার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ধাঁচে মধ্যপ্রদেশে প্রকল্পের কথা শুনিয়েছিল কংগ্রেস ও বিজেপি উভয়পক্ষ। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে জানিয়েছিলেন, মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে জিতলে সে রাজ্যের প্রতিটি পরিবারের গৃহকর্ত্রীকে মাসে প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা দেওয়া হবে। গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহৃত গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ৫০০ টাকা করার জন্য প্রয়োজনীয় ভর্তুকির ব্যবস্থাও করা হবে। পাশাপাশি, তাঁর প্রতিশ্রুতি, প্রতি পরিবারকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনামূল্যে দেবে কংগ্রেস। ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম অর্ধেক করা হবে। কৃষিঋণ মকুব এবং পুরনো পেনশন প্রকল্প ফিরিয়ে আনারও প্রতিশ্রুতি  দিয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ঘোষণা করেছিলেন, বোনেদের মাথায় পাকা ছাদ। পাশাপাশি, বাড়ির গৃহকর্ত্রী এবং কন্যাসন্তানদের জন্য আর্থিক সুবিধা৷ ভর্তুকি মহিলাদের নামে থাকা রান্নার গ্যাসেও৷ রবিবার নির্বাচনী ফলাফল যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মধ্যপ্রদেশে এই ল্যান্ড স্লাইড ভিক্ট্রিতে বিজেপির অন্যতম তুরুপের তাস হল আসলে এই ‘পাইয়ে দেওয়ার’ প্রকল্পই৷