জেলা রাজনীতি

এসআইআরের প্রতিবাদ আবার রাজপথে মুখ্যমন্ত্রী,  বনগাঁয় করবেন জনসভাও

 SIR প্রক্রিয়া ঘিরে নানাবিধ প্রশ্ন উঠেছে ৷ অভিযোগ, কাজের চাপে প্রাণও গিয়েছে একাধিক বিএলও-র ৷ ইতিমধ্যেই এসআইআর বন্ধ করার দাবি জানিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতীকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এবার আবারও পথে নামছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ মঙ্গলবার মতুয়া-গড় বঁনগায় মিছিল থেকে শুরু করে জনসভা করবেন তিনি ৷ বনগাঁ মহকুমায় তাঁর কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। দিনভর চলবে মিছিল ও জনসভা। চাঁদপাড়া থেকে ঠাকুরনগর পর্যন্ত মিছিলের পর বনগাঁর ত্রিকোণ পার্কে বড় সভা করবেন মমতা। মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় আতঙ্ক বেশি থাকায় সেখানে আলাদা প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। ইতিপূর্বে মতুয়াদের একাংশ অনশন আন্দোলনে নামলেও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে তারা অনশন প্রত্যাহার করে। এবার ওই অঞ্চলে বাসিন্দাদের আশঙ্কা দূর করতে উদ্যোগ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী । বাংলার শাসক শিবিরের দাবি, এসআইআর শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের নানা প্রান্তে উদ্বেগজনক খবর আসছে। আতঙ্কে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন ৷ এমনকী একাধিক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। বিশেষ করে পুরনো ভোটার তালিকায় নাম না থাকার ভয় মানুষকে দিশাহারা করে তুলেছে। 2002 সালের তালিকায় নাম না থাকলেই ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে হবে-এই ভুল ধারণা অনেকের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, ভুল ব্যাখ্যা ও অনিশ্চয়তার পরিবেশ আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তুলছে। শুধু ভোটার নন, চরম চাপে পড়েছেন বুথ লেভেল অফিসাররাও। অতিরিক্ত দায়িত্ব, দীর্ঘক্ষণ বাড়ি বাড়ি ঘোরা, নথি যাচাইয়ের চাপ-সবমিলিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েকজন বিএলও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে একজন বিএলও’র প্রাণ গিয়েছে ৷ আরেকজন নিজেকে শেষ করার পথ বেছে নিয়েছেন । পরিস্থিতির এই অবনতিকে বিপজ্জনক ও অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, “এসআইআর প্রক্রিয়াটি যেভাবে তড়িঘড়ি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কেবল বিশৃঙ্খলা তৈরি করেনি, বরং প্রশাসনিক কাজের ধারাকেও পঙ্গু করে দিয়েছে। প্রশিক্ষণের ঘাটতি, কোন কোন নথি বাধ্যতামূলক তা নিয়ে বিভ্রান্তি, আর কর্মীদের দৈনন্দিন সময়সূচির মধ্যে বাড়ি বাড়ি পৌঁছনোর অসম্ভব চ্যালেঞ্জ-এই সমস্ত কারণে প্রবল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে ।” তিনি আরও লেখেন, যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া চাপিয়ে দেওয়া এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ করে অবিলম্বে পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এই পদ্ধতি অব্যাহত থাকলে তার অভিঘাত পড়বে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মৌলিক কাঠামোর উপর। এসআইআর নিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে তৃণমূল। রাজ্যে হেল্পডেস্ক চালুর পাশাপাশি কলকাতায় রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো পর্যন্ত পদযাত্রা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক। বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের দাবি সরাসরি অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, সাধারণ অসুস্থতার মৃত্যুকেও এসআইআর-এর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে। তারা বলছে, এসআইআর চালু হওয়া একেবারেই নিয়মমাফিক ও আইনানুগ প্রক্রিয়া, যা দেশজুড়েই হয়। তৃণমূল অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ৷