দেশ

মণিপুরের হিংসার ঘটনার তদন্তে ৩ অবসরপ্রাপ্ত মহিলা বিচারপতির কমিটি গঠন করল সুপ্রিমকোর্ট

বিজেপি শাসিত মণিপুরে ‘আইনের শাসনের প্রতি বিশ্বাস ফেরাতে’, সোমবার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মণিপুরের বিভিন্ন হিংসার ঘটনার তদন্ত, ত্রাণের কাজ, ক্ষতিপূরণ দেওয়া, হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং বিভিন্ন ধ্বংস হয়ে যাওয়া ধর্মীয় স্থানের পুননির্মাণের মতো মানবিক কাজগুলি পর্যালোচনার জন্য, দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত তিন মহিলা বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল। এছাড়া কমিটিতে থাকছেন বম্বে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শালিনী ফাঁসালার জোশী এবং দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আশা মেনন। এছাড়া, যৌন হিংসা সংক্রান্ত যে ১১টি ঘটনার ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, সেগুলির তদন্তের ভার সিবিআই-কে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার স্বার্থে, সিবিআই-এর তদন্তকারী দলে অন্যান্য রাজ্যের ডিওয়াইএসপি পদের অন্তত ৫ জন অফিসারকে রাখা হবে। সিবিআইয়ের প্রশাসনিক আওতাতেই এই আধিকারিকরা কাজ করবেন। শুধু তাই নয়, সিবিআইকে এই মামলাগুলির তদন্তের বিষয়ে রিপোর্ট করতে হবে শীর্ষ আদালতে। এর জন্য, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন ডিজিপি তথা মুম্বই পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার, দত্তাত্রেয় পদসালগিকরকে তত্ত্বাবধায়ক অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করেছে আদালত। সিবিআই তদন্তের বিষয়ে আদালতকে অবহিত করবেন তিনি। এই বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, “এর ফলে সিবিআই তদন্তে নিরাপত্তার আরও একটি স্তর যুক্ত হয়েছে।” যে মামলাগুলি সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না, সেগুলির তদন্ত করবে মণিপুর রাজ্য পুলিশ। এদিন এই বিষয়ে রাজ্যের পক্ষে আদালতে উপস্থিত সলিসিটর জেনরেল তুষার মেহতা জানান, এই মামলাগুলির তদন্তের জন্য ৪২টি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করবে রাজ্য। তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার জন্য, এই বিশেষ তদন্তকারী দলগুলিতে, অন্যান্য রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর অন্তত একজন করে ইনস্পেক্টরকে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ভিন রাজ্যের ৬ জন ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার এই এসাইটিগুলির তত্ত্বাবধান করবেন। মণিপুরের হিংসার বিষয়ে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ এই মামলাগুলির শুনানি করছে। গত সপ্তাহে, প্রধান বিচারপতি তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন মণিপুর রাজ্য প্রশাসনের। তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশ অনাবশ্যক দেরি করছে বলে সমালোচনা করেছিল শীর্ষ আদালত। ঘটনার বেশ কয়েক দিন পর সেই বিষয়ে এফআইআর নথিভুক্ত করা হচ্ছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, যতগুলি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে, সেই তুলনায় গ্রেফতার খুব কম করা হয়েছে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছিল আদালত। মণিপুরের ডিজিপিকে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ মেনে এদিন আদালতে হাজিরা দেন মণিপুরের ডিজিপি। তাঁর সামনেই তদন্ত সংক্রান্ত নির্দেশগুলি দেয় আদালত।