দেশ

বৈবাহিক ধর্ষণও অপরাধ, জানাল শীর্ষ আদালত

আগামী দিনে বৈবাহিক ধর্ষণকেও অপরাধ বলে গণ্য করা হবে ৷ বৃহস্পতিবার একটি পর্যবেক্ষণে একথা জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত ৷ সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য হল, ভারতের প্রত্যেক নারীরই নিরাপদ এবং আইনসম্মত গর্ভপাতের অধিকার রয়েছে ৷ গর্ভপাত সংক্রান্ত আইন এবং নিয়মাবলী অনুসারে, বৈবাহিক ধর্ষণও অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে ৷ এদিন আদালত তার পর্যবেক্ষণে আরও জানায়, ১৯৭১ সালের গর্ভপাত সংক্রান্ত আইন এবং নিয়মাবলী অনুসারে বিবাহিতাদের পাশাপাশি অবিবাহিতাদেরও গর্ভপাতের অধিকার রয়েছে ৷ একজন মহিলা গর্ভনিরোধক ওষুধ খাবেন কিনা, তিনি সন্তানের জন্ম দেবেন কিনা, কিংবা তিনি কতগুলি সন্তানের জন্ম দেবেন, এই সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র সেই মহিলাই নিতে পারেন বলে মনে করে শীর্ষ আদালত ৷ আর এক্ষেত্রে সমাজ কোনওভাবেই তাঁকে বাধ্য করতে পারে না ৷ আদালতের আরও ব্যাখ্য়া, আসন্ন সন্তানের সুস্থতা অনেকাংশেই গর্ভবতী মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে ৷ তাই কোনওভাবে কাউকে সন্তানধারণের জন্য চাপ দেওয়া যেতে পারে না ৷ এতে সেই মহিলার মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ এই প্রসঙ্গেই আদালত ধর্ষণের শিকার সেইসব নারীর কথা উল্লেখ করে, যাঁরা নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গর্ভবতী হন ৷ সেক্ষেত্রে ধর্ষণ অবশ্যই একটি অপরাধ ৷ একইভাবে কোনও বিবাহিতা যদি সন্তান ধারণে রাজি না হন, কিন্তু, তারপরও তাঁকে এর জন্য বাধ্য করা হলে এবং তিনি বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হলে, তাহলে সেই ঘটনাও আর পাঁচটা ধর্ষণের থেকে আলাদা কিছু নয় ৷ এক্ষেত্রে মহিলার স্বামীর বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ উঠবে ৷ এবং দোষ প্রমাণে তা অপরাধ বলে গণ্য করা হবে ৷ বৃহস্পতিবার বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে সংশ্লিষ্ট একটি মামলা শুনানির জন্য ওঠে ৷ সেখানেই ১৯৭১ সালের আইনের বিস্তারিত ব্যাখ্য়া করেন বিচারপতিরা ৷ সেই আইনে ২০২১ সালে সংশোধনও করা হয় ৷ সেই অনুসারে, বিবাহিতা ও অবিবাহিতা নির্বিশেষে সমস্ত ভারতীয় নারীর গর্ভপাতের নিরাপদ ও আইনি অধিকার রয়েছে ৷ আদালত মনে করে, এই বিষয়টি নিয়ে বিবাহিতা এবং অবিবাহিতাদের মধ্যে একটি কৃত্রিম পার্থক্য তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল ৷ যা মোটেও যুক্তিগ্রাহ্য নয় ৷ প্রত্যেক মহিলাই এই বিষয়ে স্বাধীন এবং তাঁরা যাতে এই অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই হবে ৷