দেশ

 প্রয়াত মুলায়ম সিং যাদব

প্রয়াত উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদব ৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর ৷ দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি ৷ ২২ অগস্ট তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । ১ অক্টোবর রাতে তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয় । অবশেষে মাস দেড়েক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর সোমবার তিনি প্রয়াত হলেন ৷ বয়স জনিত কারণে গত ২ বছর ধরেই মুলায়ম সিং যাদব অসুস্থ ছিলেন ৷ বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল ৷ কিন্তু, সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় তাঁর ৷ গত ২২ অগস্ট থেকে তিনি হাসপাতালে গুরুগ্রামের মেদান্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৷ কিন্তু, তাঁর শারীরিক অবস্থার তেমন কোনও উন্নতি হয়নি ৷ পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে, তাঁকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ৷ গতকাল রাত থেকে মুলায়ম সিং যাদবের শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয় ৷ চিকিৎসকরা শেষবারের মতো চেষ্টা করলেও, আজ সকাল ৮টা ১৬ মিনিটে সব লড়াই শেষ করে পরোলোক গমন করেন তিনি ৷

উল্লেখ্য, মুলায়ম সিং যাদব ১৯৯২ সালে, যখন সমাজবাদী পার্টি গঠন করেন, তখন কেউই সম্ভবত বিশ্বাস করেনি যে আঞ্চলিক দলগুলিও জাতীয় প্যারামিটারে জায়গা করতে পারবে । মাত্র চার বছরেই মুলায়ম তা প্রমাণ করেছিলেন । সমাজবাদী পার্টি কেবল কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষাই করেনি, বরং একটি ধর্মনিরপেক্ষ তৃতীয় ফ্রন্টেরও জন্ম দিয়েছিল, যার মাধ্যমে ছোট আঞ্চলিক দলগুলি জাতীয় স্তরে তাদের দাবি জানাতে সক্ষম ছিল। তিনি বিজেপি-বিরোধী, কংগ্রেস-বিরোধী শক্তির সমন্বয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের পদক্ষেপের অন্যতম প্রধান স্থপতি । ১৯৯৬ সালের কংগ্রেস কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যায়, বিজেপি সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় বেঞ্চমার্ক পর্যন্ত পৌঁছনোর অবস্থায় ছিল না । সেসময় এইচডি দেবগৌড়া এবং আইকে গুজরালের প্রধানমন্ত্রীত্বের অধীনে ১৯৯৬ এবং ১৯৯৮ সালের মধ্যে কেন্দ্রে পরপর দু’টি সরকার গঠনেই শুধু সফল হননি, কেন্দ্রে রাজ্য-স্তরের দলগুলির উপস্থিতি এবং গুরুত্বও বৃদ্ধি করেছিলেন মুলায়ম সিং যাদব । একজন প্রশিক্ষিত কুস্তিগীর মুলায়ম সিং ভারতীয় রাজনীতির স্তম্ভদের অন্যতম । ১৯৩৯9 সালের ৩১ নভেম্বর ইটাওয়ার সাইফাই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সপার প্রতিষ্ঠাতা । আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআর কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাশ করেন। মাত্র 15 বছর বয়সে সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় আকৃষ্ট হন তিনি । সেই সময়েই ডক্টর রাম মনোহর লোহিয়ার সংস্পর্শে আসেন, যিনি সেসময়ের অন্যতম সমাজতান্ত্রিক নেতা । সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে তিন মাস জেল খাটেন ।