মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ১৯৩/৪ (রোহিত-৩৫, সূর্যকুমার-৭৯)
রাজস্থান রয়্যালস: ১৩৬/১০ (বাটলার-৭০)
৫৭ রানে জয়ী মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
পর পর তিনটে ম্যাচ জিতে জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফেললেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তাদের দুশো রানের কাছে এ দিন কার্যত অসহায় ভাবে আত্মসমর্পণ করল রাজস্থান। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে অনুষ্ঠিত আইপিএলের বেশিরভাগ ম্যাচেই প্রথমে ব্যাট করা দল জিতছে। দুবাইয়ের পিচে এই ব্যাপারটা বেশি হলেও, আবু ধাবিতেও অনেকগুলো ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা দল জিতেছে। সেই কারণে এ দিন টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। দলের সেরা পেসার জোফরা আর্চারকে চতুর্থ ওভারে প্রথমবার বল করতে ডাকেন রাজস্থান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। কিন্তু ততক্ষণ উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছেন মুম্বইয়ের দুই ওপেনার রোহিত এবং কুইন্টন ডে কক। তবে মুম্বই শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন কার্তিক ত্যাগী। ২৩ রানে ফেরান ডে কককে। উইকেটে জমে গিয়েছিলেন রোহিত। কিন্তু দশম ওভারে শ্রেয়াস গোপালকে মারতে গিয়ে লং অনে তিনি ধরা পড়েন রাহুল তেওয়াটিয়ার হাতে। এর ঠিক পরের বলেও গোপালের শিকার ঈশান কিষাণ। খাতা খোলেননি তিনি। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৪ বলে ২০ রান করেছিলেন ক্রুনাল পাণ্ড্য। সেই কারণে এদিন তাঁকে পোলার্ড-হার্দিকের আগে পাঠানো হয়েছিল। এ দিন ক্রুনাল পাণ্ড্য রানের গতি বাড়াতে পারেননি। তবে এ দিন জ্বলে ওঠেন সূর্যকুমার যাদব। মুম্বইকে ১৯৩ রানে পৌঁছে দেওয়ার পিছনে তাঁরই সব থেকে বড়ো অবদান। তিনি ৪৭ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন। সূর্যকুমার জ্বলে না উঠলে মুম্বই এই রান করতে পারত না। হার্দিক পাণ্ড্য ১৯ বলে ৩০ রান করেন। শারজায় দুটো ম্যাচ খেলে যে দুর্দান্ত শুরু রাজস্থান করেছিল, শারজা থেকে বেরিয়ে আসতেই সেটা আর দেখা যাচ্ছে না তাদের মধ্যে। দুবাইয়ে কেকেআরের বিরুদ্ধে হারের পর এই আবু ধাবিতেই গত শনিবার বেঙ্গালুরুর কাছে হেরেছিল তারা। এ দিনও শুরুতেই ধসে পড়ল তাদের টপ অর্ডার। এ দিন দলে প্রত্যাবর্তন করেন যশস্বী জয়সওয়াল। তাঁকে জায়গা করে দিতে তিন নম্বরে নেমে যান স্মিথ। কিন্তু বোল্ট আর বুমরাহর দাপটে স্কোরবোর্ডে উল্লেখযোগ্য কিছু ওঠার আগেই তিনটে উইকেট হারায় তারা। যশস্বী ছাড়াও ফিরে যান স্মিথ এবং সঞ্জু স্যামসন। রাহুল তেওয়াটিয়া এক আধদিন জ্বলে উঠলেও তাঁকে ভরসা করার মতো এখনও পৌঁছতে পারেনি রাজস্থান। ফলে দ্রুত তিনটে উইকেট হারিয়ে তাদের যাবতীয় আশা এবং ভরসা গিয়ে পড়ে জস বাটলারের ওপরে। এই বাটলারই পালটা লড়াই দিতে শুরু করেন। মিনিট ১৫-২০ ধরে আবু ধাবিতে শুধু বাটলার শো চলতে থাকে। একের পর এক বলকে তিনি বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে শুরু করে। তাঁর দাপট এতটাই বেশি ছিল যে রাজস্থান দলগত ভাবে একশো পেরোনোর আগেই বাটলারের নামের পাশে ৭০ উঠে যায়। দুর্ধর্ষ ইনিংসকে থামার জন্য দুর্ধর্ষ কিছু কেরামতির প্রয়োজন হয়। সেটাই করে দেখান কায়রন পোলার্ড। বাউন্ডারি লাইনে দু’বারের চেষ্টায় দুর্দান্ত একটা ক্যাচ ধরে বাটলার বিদায় করেন তিনি। একশোর আগেই পাঁচ উইকেট পড়ে যাওয়ায় রাজস্থানের ভাগ্য তখনই লেখা হয়ে যায় প্রায়। না রাহুল তেওয়াটিয়া এ দিন কিছুই করতে পারেননি, ঠিক যেমনটা রাজস্থানের বাকি ব্যাটিং লাইনআপ করতে পারেনি। বাটলার ছাড়া বাকি দলের অবদান মাত্র ৬৬। এ দিন দুর্দান্ত ফর্মে বল করলেন জসপ্রীত বুমরাহ। এই টুর্নামেন্টে এখনও তিনি নিজের সেরাটা দিতে পারেননি। রান গলিয়েছেন অনবরত। কিন্তু মঙ্গলবার এক দম পুরনো বুমরাহকে পাওয়া গেল। রাজস্থান প্রথম দুটো ম্যাচ জয়ের পর লিগের মগডালে উঠে পড়লেও হারের হ্যাটট্রিক করে প্রবল চাপে পড়েছে তারা। সেই চাপ কাটানোর জন্য এখন অধিনায়ক স্মিথকেই কিছু করতে হবে।