দেশ

দেশ জুড়ে রাত ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত নাইট কার্ফু জারি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

নয়াদিল্লিঃ চতুর্থ দফার লকডাউন ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই গাইডলাইন প্রকাশ করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আগামীকাল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত কী করা যাবে, কী যাবে না, কী খোলা থাকবে, কী থাকবে না তা বিস্তারিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দেওয়া গাইডলাইনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেশজুড়ে নাইট কার্ফু জারির সিদ্ধান্ত। রাত ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা দেশে নাইট কার্ফু চলবে। এই সময় অতি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরনো যাবে না। এছাড়া রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোন ঠিক করার দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির উপরই। এতদিন যা ছিল কেন্দ্রের আওতায়। পাশাপাশি কন্টেনমেন্ট এলাকায় কোনও ছাড় মিলবে না বলে জানানো হয়েছে। ৬৫ বছরের বেশি ও ১০ বছরের কম বয়সী, কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন ব্যক্তি, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, রাজ্যগুলি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বাস পরিষেবা চালু করতে পারে। এছাড়া উড়ান, ট্রেন, মেট্রো পরিষেবা বন্ধই থাকবে। বন্ধ থাকছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল, রেস্তরাঁ, সিনেমা হল, শপিং মল, জিম, সুইমিং পুল, পার্ক, ধর্মীয় স্থানগুলি। তবে স্টেডিয়াম ও স্পোর্টস কমপ্লেক্সগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও সমর্থকদের প্রবেশাধিকার থাকবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে জাতীয় নির্দেশাবলী লাগু করেছে, তাতে এও বলা হয়েছে প্রকাশ্য স্থান ও কর্মক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। প্রকাশ্য স্থানে থুথু ফেললে জরিমানা হবে এবং প্রকাশ্য স্থানে মদ্যপান করা যাবে না, পান বা গুটখা খাওয়া যাবে না। এ ছাড়া ৩১ মে পর্যন্ত জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে। এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া সমস্ত দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল নিষিদ্ধ।

কোভিড মোকাবিলায় জাতীয় নির্দেশিকা:

🔴 বিমান পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। দেশের মধ্যে এবং বাইরে। একমাত্র চিকিৎসার প্রয়োজনে পরিষেবা বা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনও যাত্রাবাহী বিমান চলবে না।
🔴‌ বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল।
🔴‌ ‌হোটেল, রেস্তোরাঁ স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার সমস্ত বন্ধ থাকবে। অনলাইন পঠনপাঠনের ব্যবস্থা চালু থাকবে।
🔴‌ যেসব হোটেলে বা গেস্ট হাউসে চিকিৎসক বা অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের রাখা হয়েছে, সেগুলি খোলা থাকবে।
🔴 সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা হল, শপিং কমপ্লেক্স, স্যুইমিং পুল, জিমনাশিয়াম, অডিটোরিয়াম, এন্টারটেইনমেন্ট পার্ক, বার, থিয়েটার খোলা যাবে না।
🔴 সমস্ত রকম সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও বিনোদন সংক্রান্ত বড় জমায়েত বন্ধ রাখতে হবে।
🔴‌ সব রকম ধর্মস্থান বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
🔴 কর্মক্ষেত্র ও প্রকাশ্য স্থানে মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
🔴 প্রকাশ্য স্থান ও কর্মক্ষেত্রে খুখু ফেলা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
🔴 সমস্ত প্রকাশ্য স্থানে ও পরিবহণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
🔴 বিয়ের মত ক্ষেত্রে জমায়েতে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। ৫০ জনের বেশি অতিথিকে ডাকা যাবে না।
🔴 শেষকৃত্যের মত ক্ষেত্রে জমায়েতেও সামাজিক দূরত্ববিধি মানতে হবে এবং কোনওভাবেই ২০ জনের বেশি জমায়েত হওয়া যাবে না।
🔴 প্রকাশ্য স্থানে মদ্যপান, গুটখা, পান বা তামাক চিবোনো যাবে না।
🔴 দোকানে ক্রেতার থেকে ৬ ফুটের দূরত্ব রাখতে হবে এবং একসঙ্গে ৫ জনের বেশি খদ্দের দোকানে আসতে দেওয়া চলবে না।

কর্মক্ষেত্রের জন্য নির্দেশিকা:

🔴 যতদূর সম্ভব, বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে।
🔴 কর্মক্ষেত্র, দোকান, বাজার, শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থায় কাজের সময়ের শিথিলবিধি অনুসরণ করা উচিত।
🔴 ঢোকা বেরোনোর সময়ে থার্মাল স্ক্যানিং, হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার রাখতে হবে।
🔴 পুরো কর্মক্ষেত্র, সাধারণ স্থান, এবং দরজার হাতলের মত যে সব জায়গায় 🔴 মানুষের সংস্পর্শ আসে, সেখানে বারবার স্যানিটাইজ করতে হবে।
🔴 সমস্ত কাজের জায়গায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, দুটি শিফটের মধ্যে সময়ের ব্যবধান রাখতে হবে।