ক্রাইম দেশ

উত্তরপ্রদেশের হাথরসে নির্যাতিতার বাবাকে গুলি করে খুন, জেল থেকে বেরিয়েই বদলা নিল অভিযুক্ত

যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। তিন বছর জেল খেটে বেরিয়েই ভয়ঙ্কর বদলা নিল অপরাধী। গুলি করে খুন করল নির্যাতিতা তরুণীর বাবাকে। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে একের পর এক ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে দেশবাসীকে। ফের এমন ঘটনা সামনে আসায় ঘুম উড়েছে প্রশাসনের। হাথরসের এক তরুণীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল গ্রামেরই এক তরুণের বিরুদ্ধে। নাম গৌরব শর্মা। সেটা ২০১৮ সাল। এই ঘটনা নিয়ে সে সময় তোলপাড় হয় হাথরসে। পুলিশ গ্রেফতার করে গৌরবকে। আদালতে তোলা হয়। বিচারে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় গৌরবকে। পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল জেলা আদালতে জামিন পায় গৌরব। তারপরেই সটান চলে যায় নির্যাতিতার বাড়িতে। মেয়েটির পরিবার জানিয়েছে, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ দলবল নিয়ে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয় গৌরব। পরিবারের সকলকে হুমকি দিতে থাকে। মেয়েটির বাবা বেরিয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়। কথা কাটাকাটির মাঝে পিস্তল বের করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে গৌরব। গুলিবিদ্ধ হন নির্যাতিতা তরুণীর বাবা। রক্তাক্ত লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রাই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান মেয়েটির বাবাকে। কিন্তু পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। হাথরস পুলিশের কর্তা বিনীত জয়সওয়াল টুইটারে একটি ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, “যে ব্যক্তি মারা গিয়েছেন ২০১৮ সালের জুলাই মাসে তিনি গৌরব শর্মার বিরুদ্ধে একটি যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। এক মাসের জন্য জেলেও থাকতে হয় গৌরবকে। এরপর থেকে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্য ছিলই। সোমবার গৌরবের মা ও কাকিমা গ্রামেরই একটি মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। সেখানেই ছিলেন ওই তরুণী ও তাঁর বাবা। ওই মহিলা তর্ক শুরু করেন বাবা-মেয়ের সঙ্গে। এরপরই সেখানে ঢুকে পড়েন গৌরব শর্মা। গৌরব কয়েকজন ছেলেকে ডেকে আনেন। গুলি করা হয় তরুণীর বাবাকে।” অন্যদিকে অভিযোগকারী তরুণীরও একটি ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মেয়েটি চিৎকার করে বলছেন “দয়া করে আমাকে বিচার দিন। আমার সঙ্গে ন্যয় করুন। প্রথমে আমাকে যৌন হেনস্তা করা হল। এখন আমার বাবাকে গুলি করে খুন করা হল। ছ’-সাতজন সেখানে ছিল।” যোগী রাজ্য উত্তর প্রদেশে এমন নৃশংসতার উদাহরণ এই প্রথম নয়। এর আগেও হাথরসে চার উচ্চবর্ণের যুবকের গণধর্ষণের শিকার হন সেখানকারই এক দলিত মহিলা। ঘটনার ১৫ দিন পর দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। তা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ।