তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনে সুপারি কিলাররাই জড়িত, বৃহস্পতি থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পাঁচজনকে ধরার পর এমনটাই মনে করছে পুলিশ ৷ যে পাঁচজনকে ধরা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে দু’জন বিহারের বাসিন্দা ৷ বাকি তিনজন মালদা জেলারই ৷ পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতরা স্বীকার করে নিয়েছে যে ১২ লাখ টাকায় তাঁদের সঙ্গে খুনের ডিল হয়েছিল ৷ তবে কে বা কারা এই খুনের সুপারি দিয়েছিল, তা তাঁদের জানা নেই ৷ তাঁরা শুধু ভাড়াটে খুনি হিসাবে নিজেদের কাজ করেছেন ৷জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ডিলের ১২ লাখ টাকার মধ্যে ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে ৷ তবে কে বা কারা খুনের পরিকল্পনায় জড়িত, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি ৷ এক্ষেত্রে পুলিশের রাডারে উঠে আসছে একাধিক নাম ৷ তার মধ্যে কিছু রাঘব বোয়ালের নামও রয়েছে বলে খবর ৷ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার পরই সিসিটিভির ফুটেজ প্রতিটি থানায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ তাতেই ধরা পড়ে দুই দুষ্কৃতী ৷ জানা গিয়েছে, তাঁরা দুলালবাবুকে খুন করার পর কাছেই রেলগেট পেরিয়ে পাড়ার রাস্তা ধরে রথবাড়ি এলাকায় ওঠেন ৷ রেলগেটের কাছে একজন নিজের জ্যাকেট ও জুতো খুলে ফেলেন ৷ রথবাড়ি পেরিয়ে মানিকচকের দিকে যাওয়ার পথে বাগবাড়ি এলাকায় একটি জঙ্গলের মধ্যে নিজেদের মোটর বাইকটিও ফেলে দেন ৷ সেখান থেকে বাস ধরে তাঁরা মানিকচক চলে যান ৷ উদ্দেশ্য ছিল, গঙ্গা পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে চলে যাওয়া ৷ গঙ্গার ঘাটেই তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ৷পরে তাঁদের ফেলে যাওয়া বাইক, জুতো ও জ্যাকেট উদ্ধার করেছে পুলিশ ৷ দুলালবাবুর গাড়ির চালক যে কোম্পানির বাইকের কথা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, সেই কোম্পানিরই মোটর বাইক উদ্ধার করা হয়েছে ৷ গ্রেফতার হওয়া দুই দুষ্কৃতীর নাম মহম্মদ সামি আখতার ও টিংকু ঘোষ ৷ ২০ বছরের সামির বাড়ি বিহারের কাটিহার জেলার কানহারিয়া এলাকায় ৷ টিংকু মালদা শহর সংলগ্ন যদুপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাবগাছি এলাকার বাসিন্দা ৷ তাঁদের জেরা করে বিহার থেকে আরও এক দুষ্কৃতীকে আটক করা হয়েছে ৷ এদিন তাঁকে বিহার থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় নিয়ে আসা হয়েছে ৷ দুপুরে তাঁকে নিয়ে ইংরেজবাজারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে পুলিশ ৷ এছাড়াও মালদা শহরের মহানন্দা পল্লি ও কুলদীপ মিশ্র কলোনির আরও দুই যুবককে এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে বলে পুলিশের তরফ থেকে জানা গিয়েছে ৷ এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ দুলালবাবুর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয় ৷ তাঁর শরীরে মোট সাতটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে ৷ তিনটি গুলি মাথার পিছনে একই জায়গায় করা হয়েছিল ৷ একটি গুলি উদ্ধার হয় পিঠের উপরের অংশ থেকে ৷ দু’টি গুলির ছিদ্র পিঠের নীচের অংশে পাওয়া গেলেও কার্তুজ পাওয়া যায়নি ৷ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের অনুমান, ওই দু’টি গুলি শরীরে লাগার পর অন্যদিকে ছিটকে গেলেও যেতে পারে ৷