নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিন রবিবার দুপুরেই রাজধানীর রাজপথে আন্দোলনরত কুস্তিগীরদের টেনেহিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তুলেছিল অমিত শাহের অধীনস্ত দিল্লি পুলিশ ও সিআরপিএফের বীর পুঙ্গব কনস্টেবল-আধিকারিকরা। আর তার কয়েক ঘন্টা বাদেই রাতে দেশকে পদক এনে দেওয়া ভিনেশ ফোগত-সাক্ষী মালিক-বজরং পুনিয়াদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। পাশাপাশি আন্দোলনকারী কুস্তিগীরদের চরিত্রহননে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবিরের কুখ্যাত আইটি সেল। সঙ্গীতা ও ভিনেশ ফোগতদের ছবি বিকৃত করে টুইটার-সহ সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছে। জাতীয় কুস্তি সঙ্ঘের সভাপতি তথা বাহুবলী বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলে গত মাস খানেক ধরে যন্তর-মন্তরে ধর্না-অবস্থানে বসেছিলেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরা ভিনেশ ফোগত-সাক্ষী মালিক-বজরং পুনিয়া-সঙ্গীতা ফোগত-সহ কুস্তিগীররা। যদিও অলিম্পিক পদকজয়ী কুস্তিগীরদের দাবি মেনে নিতে রাজি হয়নি মোদি সরকার। এদিন নয়া সংসদ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু
প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যাতে বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য নখদাঁত বের করে আসরে নেমেছিল অমিত শাহের অধীনস্ত দিল্লি পুলিশ-সিআরপিএফ-র্যাফ সহ আধা সামরিক বাহিনী। যন্তর-মন্তর থেকে সংসদ ভবনের দিকে এগনোর মুখেই কার্যত পদকজয়ী কুস্তিগীরদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে উর্দিধারীরা। তার পরেই কার্যত অপরাধীর মতো টেনেহিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় সাক্ষী মালিক-ভিনেশ ফোগত-বজরং পুনিয়াদের। কয়েক ঘন্টা বাদে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা বাদেই সংসদ ভবন অভিযানে সামিল কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাঁধানো, অবৈধভাবে জড়ো হওয়া, কর্তব্যরত আধিকারিকদের বাধা দেওয়া-সহ একাধিক গুরুতর ফৌজদারি ধারায় মামলা দায়ের করা হয় দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে। প্রসঙ্গত, যন্তরমন্তরে নতুন সংসদ ভবন থেকে মাত্র দু’ কিলোমিটার দূরে প্রতিবাদী কুস্তিগিররা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে দেশের কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান, বিজেপি নেতা ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের অপসারণ ও গ্রেফতারির দাবিতে অবস্থানে করছিলেন। অভিযোগ, ব্রিজভূষণ দীর্ঘদিন ধরে মহিলা কুস্তিগিরদের ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন। ব্রিজভূষণ যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এখন বিজেপি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করেনি। অথচ দেশের হয়ে পদক জয়ী কুস্তিগীরদের টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে আটক করেছিল।