দেশ

ইলন মাস্ককে ভারতে বিনিয়োগের আবেদন জানালেন সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা

সম্প্রতি টুইটার কিনে হইচই ফেলে দিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক ৷ ভারতে কী বিনিয়োগ করবেন মাস্ক, এদেশে তাঁর সংস্থা টেসলা আসবে কি না তা জানতেও উৎসাহের শেষ নেই ৷ এমতাবস্থায় এবার মাস্ককে ভারতে বিনিয়োগের আবেদন জানালেন সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা৷ ভারতে তাঁর বিনিয়োগ যে সেরা বিনিয়োগ হতে পারে তাও ইলন মাস্ককে মনে করিয়ে দিয়েছেন সেরাম কর্তা আদর পুনাওয়ালা ৷ টুইটে ইলন মাস্ককে ট্যাগ করে রবিবার আদর পুনাওয়ালা লিখলেন, “আপনি যদি টুইটার কিনেই থামতে না চাও তাহলে ভারতেও কিছু অর্থ বিনিয়োগ করে এখানে টেসলার গাড়ি তৈরি করতে পারেন ৷ আমি কথা দিতে পারি এই বিনিয়োগ এখনও পর্যন্ত তোমার সেরা বিনিয়োগ হবে ৷” যদিও ইলন মাস্কের তরফ থেকে এখনও পর্যন্তকোন উত্তর পাওয়া যায়নি৷

উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতে টুইটারের ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কেনেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। এর তিন সপ্তাহ পরই টুইটারের সব শেয়ার ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে কিনে কোম্পানিটির স্বত্বাধিকারী হওয়ার চুক্তিতে পৌঁছান তিনি। অতীতে টুইটারের বিরুদ্ধে বাকস্বাধীনতা হরণের অভিযোগ করেছিলেন মাস্ক। অপ্রতিরোধ্য ইলন মাস্ক পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপ করতে ভালোবাসেন। সৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার পছন্দ তার। এমন এক গাড়ি নির্মাণ করেছেন যাতে গ্যাসের দরকার পড়ে না, চালক না থাকলেও চলে। তার সামান্য অঙ্গুলি হেলনেই শেয়ারবাজার ওঠে অথবা নামে। তার প্রতিটি বাক্য মন্ত্রমুগ্ধের মতো শোনে ভক্তরা। টুইটারে তার ফলোয়ারের সংখ্যা আট কোটির বেশি। বিশ্বের শীর্ষ এই ধনী ৫০ বছর বয়সেই পৃথিবী জয় করেছেন। তার দৃষ্টি এখন মঙ্গল গ্রহে। স্বপ্ন, পৃথিবীর পাশাপাশি মঙ্গল গ্রহও মানুষের বাসযোগ্য করা। মাস্কের রকেট কোম্পানি স্পেসএক্স যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত মহাকাশ কোম্পানি বোয়িংসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ছাড়িয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। তার গাড়ি প্রতিষ্ঠান টেসলা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারের দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। টেসলার বর্তমান বাজার মূল্য এক লাখ কোটি ডলার। আড়াইশো বিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পদের মালিক মাস্ক। রোবট, সৌরশক্তি, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও জলবায়ু মাস্কের আগ্রহের বিষয়। এ ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে ব্রেন-কম্পিউটার ইমপ্লান্ট নিয়েও ব্যাপক ঝোঁক তার। আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলের ভেতর দিয়ে মানুষ ও মালামাল যাতে দ্রুত গতিতে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে, তা নিয়েও কাজ করেছেন মাস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেয়ারবাজার ওয়াল স্ট্রিট অনেকটা মাস্কই নিয়ন্ত্রণ করেন। ব্লুমবার্গের কলামিস্ট ম্যাট লেভাইন একবার বলেছিলেন, ‘পণ্যের মূল্য এখন নগদ প্রবাহের ওপর নির্ভর করে না, করে ইলন মাস্কের সঙ্গে পণ্যের নৈকট্যের ওপর। আর্থিক ব্যবস্থা এখন এভাবেই কাজ করে।’ জীবনের বড় একটা সময় নিন্দুকদের পেছনে ব্যয় করেছেন মাস্ক। তাদের প্রশ্ন জেরবার করেছে তাকে। অবশ্য গত বছর নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করতে অনেকটা সফল হয়েছেন মাস্ক। গত এপ্রিলে মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা চাঁদে মহাকাশচারী প্রেরণ-সংক্রান্ত বিশেষ চুক্তি করে। পরে অক্টোবর মাসে কার রেন্টাল জায়ান্ট হার্জ জানায়, টেসলার এক লাখ গাড়ি নিজেদের বহরে যুক্ত করবে তারা। কয়েক বছর আগেও মাস্ককে নিয়ে হাসাহাসি করতেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তাব্যক্তিরা। সেই মাস্কের সামনে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান ও শিল্পমালিকরা মাথা নত করেন।