অবশেষে তিনি রাজ্যে এলেন। দলের চরম দুর্দিনেও গোয়ালপোখরের মাঠে জন সভা করলেন রাহুল গান্ধী। রাহুল গান্ধী বলেন, ভাষার উপর আক্রমণ হচ্ছে। বাংলাকে ভাঙতে চাইছে বিজেপি। বাঙালির মধ্যে যে ভ্রাতৃত্ববোধ আছে সেটাও ভাঙতে চাইছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের এতে কিছু হবেনা। আগুন লাগলে বাংলায় লাগবে। বাংলা জ্বলবে। একবার বাংলাকে ভাগ করতে পারলে বাংলায় আগুন জ্বলবে। এমন আগুন আগে কেউ কোনওদিন দেখেনি। আগুন লাগিয়ে বাংলাতে ছারখার করে দেবে ওরা। বাংলার ভবিষত্ রক্ষা করতে আমরা এসেছি। মোদির লক্ষ্য হচ্ছে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দেওয়া। এবারের ভোট বাংলাকে বাঁচানোর ভোট। বাংলাকে বাঁচাতে হবেই। রাহুল বলেন, বড়লোক নয়, যেকোন গরিব মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন নোটবন্দি, জিএসটিতে তার কী উপকার হয়েছে? তিনি বলবেন, কোন উপকার হয়নি। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়েও মোদি ও মমতাকে একযোগে নিশানা করেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, করোনা নিয়ে চিন্তিত নয় রাজ্য অথবা কেন্দ্র। একের পর এক মানুষের করোনায় মৃত্যু হচ্ছে। তবু কারোর কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। বেকারত্ব ইস্যু নিয়ে মমতা ও মোদিকে কটাক্ষ করে রাহুল জানান, ‘বেকার যুবকদের কাজ দেওয়ার বিষয়ে কেউ চিন্তিত নয়। না মোদি না দিদি, কেউ বেকারত্ব সমস্যা নিয়ে ভাবছে না।করোনা এলে মোদী বলেন, হাততালি দাও। দীপ জ্বালাও। করোনা চলে গিয়েছে? মমতা’জি বলেন, ভোটের সময় খেলা হবে। খেলা তো রাস্তায় খেলতে হবে। এখানে কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়দানে খেলা হবে। সেটা তো আপনি করতে দেবেন না।’ রাহুল এদিন জানান, ‘আমাদের লড়াই বিজেপির আদর্শের সঙ্গে লড়াই। কারণ বিজেপি জানে কংগ্রেস এই আদর্শের লড়াইয়ে পিছু হাঁটবে না। তাই মোদিজি বলেন কংগ্রেস মুক্ত ভারত চাই। কোনওদিন বলেননি তৃণমূল মুক্ত ভারত চাই। অর্থাত্ মোদিজি জানেন ওনার তৃণমূলকে নিয়ে চিন্তা নেই, মাথাব্যথা শুধু কংগ্রেস কে নিয়েই। তাই আমাদের বিজেপির আদর্শের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। যারা গান্ধিজিকে হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’ কংগ্রেস সাংসদ এও জানান, ‘বিজেপি বাংলাকে ভাগ করার চেষ্টা করছে। যে ভাবনা বিজেপি বাংলায় ছড়ানোর চেষ্টা করছে, তা-ই অসম, তামিলনাড়ুতে করছে বিজেপি। মোদিজির লকডাউনে অদূরর্শিতা ছিল তাই আজ দেশের এই পরিস্থিতি। শ্রমিকেরা হাতজোড় করে বলেন, আমরা ঘরে যেতে চাই। তবে সোনার বাংলাওয়ালার বলেন, তোমারা না খেয়ে পেয়ে মরে যাও। সে সময়ই নরেন্দ্র মোদী নিজের ৫-১০ বন্ধুর কর মাফ করেন। রেন্দ্র মোদীর লক্ষ্য একটাই। নিজেদের মধ্যে সকলকে লড়াই করিয়ে দেওয়া। যাতে তাঁরা প্রশ্ন করতে না পারেন। কত লোককে চাকরি দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী? ভারতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছেন। এমন আইন তৈরি করেছেন, প্রথমে ছোট দোকানদারদের মেরেছেন, এখন কৃষকদের মারছেন।’ এদিন বাগডোগরাতেও জনসভা করবেন কংগ্রেস সাংসদ। রাজনৈতিক মহলের ধারণা ছিল, সর্বভারতীয় স্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাওয়ায় হয়ত কিছুটা হলেও তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে সুর কম চড়াবেন রাহুল।