প্রয়াত হলেন শেয়ার বাজারর বিগ বুল। আজ, রবিবার ৬২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। জানা গিয়েছে, এদিন তাঁকে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই চিকিৎকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ভারতের শেয়ার বাজারের বিগ বুল ছিলেন তিনি। তাঁর সাহায্যেই আকাশ এয়ারলাইন্সের প্রথম বিমান ওড়ে। আজ, তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ব্যবসায়ী মহল। রাকেশের দালাল স্ট্রিটে যাত্রা শুরু ১৯৮৫ সালে, মাত্র ৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে। ফোর্বসের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, এই মুহূর্তে তাঁর সম্পত্তির মোট পরিমাণ প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় অঙ্কে তা দাঁড়ায় ৪৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এই সাফল্য একদিনে আসেনি। দিনে দিনে তিনি হয়ে উঠেছেন দেশের অন্যতম ধনকুবের। ১৯৮৬ সালে টাটা টি’র শেয়ার থেকে বিপুল লাভ করেছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। ৪৩ টাকায় ৫ হাজারটি শেয়ার কিনেছিলেন তিনি। তিন মাসের মধ্যেই তার দাম পৌঁছয় ১৪৩ টাকায়। এক ধাক্কায় প্রায় তিন গুণ লাভ করেন রাকেশ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা। গত শতকের আটের দশকে ওই টাকার ‘মূল্য’ আজকের দিনের হিসেবে কোটি কোটি টাকা। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে
তাকাতে হয়নি তাঁকে। তাঁর জীবনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ বছর ২০০৩ সাল। টাইটান কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার থেকে বিপুল লাভ করেন তিনি। ২০০৬ সালে লুপিন সংস্থার শেয়ার থেকেও বিপুল লাভ করেন রাকেশ। এই ভাবে ক্রমেই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাকেশের পদক্ষেপে সম্পত্তির পরিমাণ বাড়তে থাকে তাঁর। তিনি বিশ্বাস করতেন, জীবনে ঝুঁকি নেওয়াটাও একটা পদক্ষেপ। তবে তা ভেবেচিন্তেই করা উচিত। উল্লেখ্য হিন্দি ছবির প্রযোজনাও করেছেন তিনি। তাঁর প্রযোজিত উল্লেখযোগ্য ছবি হল ‘ইংলিশ-ভিংলিশ’, ‘শমিতাভ’, ‘কি অ্যান্ড কা’ প্রমুখ। এছাড়াও স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অর্থাৎ কোনও সম্ভাবনাকেই ছেড়ে দিতে রাজি ছিলেন না তিনি। আর তার ফলেই এসেছে চোখ ধাঁধানো সাফল্য। গত ৭ অগাস্ট যাত্রা শুরু করেছে তাঁর এয়ারলাইন্স ‘আকাশ এয়ার’ । এই সংস্থা নিয়ে অেক স্বপ্ন ছিল রাকেশের। আগামী ৪ বছরের মধ্যে ৭০টি বিমানের উড়ানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এবং অন্য সংস্থাগুলির থেকে অপেক্ষাকৃত সস্তায় পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করেই এগতে চেয়েছিলেন। তাঁর সাফল্যের কীর্তি আগামিদিনে অন্যদের দিশা দেখাবে।