পুজো

রাস পূর্ণিমার মাহাত্ম্য !

হিন্দু ধর্মে এই পূর্ণিমা তিথির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাস মূলত বৈষ্ণব ধর্মের উৎসব। বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র এবং কৃষ্ণমন্দিরে মহা সমারোহে পালিত হয় রাস উৎসব৷  বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় শ্রীকৃষ্ণের প্রেম প্রকৃতির উৎসব। এই দিন গোপিনীদের সহযোগে রাধা-কৃষ্ণের পুজো করা হয়। একে কার্তিক পূর্ণিমাও বলা হয়। এবার রাস পূর্ণিমা পড়ছে আগামী ৯ অগ্রহায়ণ, ২৬ নভেম্বর। উত্তরভারতে দেব দীপাবলি । সারা ভারতে গুরু নানকের জন্মদিবস উদযাপন। আর বাংলার মাটিতে রাস উৎসব । বাংলা ক্যালেন্ডারে অবশ্য কার্তিক পেরিয়ে অঘ্রাণ। তবে হিন্দি ক্যালেন্ডার অনুসারে এই তিথিকেই বলে কার্তিক পূর্ণিমা। তবে এই রাস উৎসব নিয়ে পুরাণে বিভিন্ন মতভেদ আছে। কোথাও শারদ রাস, আবার কোথাও বসন্ত রাসের উল্লেখ পাওয়া যায়। অনেকে মনে করেন, ঈশ্বরের সঙ্গে আত্মার মহামিলনই রাস। আবার মনে করা হয় ‘রস’ থেকেই এসেছে ‘রাস’। পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসবে মেতে ওঠেন কৃষ্ণপ্রেমীরা। প্রেমের উত্‍সব রাস। রাস হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের সর্বোত্তম মধুর রস। আর লীলা মানে খেলা। অর্থাৎ রাসলীলার মানে শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীরাধা ও তাদের সখী-সাথীদের লীলাখেলা।এদিন সব গোপিনীদের সঙ্গে প্রেমময় লীলায় মেতেছিলেন ভগবান।লোকমুখে প্রচলিত কথা অনুসারে, এই দিন বৃন্দাবনের কালো যমুনার পাশে গোপিনীদের সঙ্গে জোছনার আলোয় অপূর্ব এক লীলায় মেতেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। এদিনই গোপিনীদের নাচে – গানে ও শ্রীকৃষ্ণের বাঁশীতে মুখর হয়ে উঠেছিল বৃন্দাবন ভূমি। বাংলার চৈতন্য ধাম নবদ্বীপের রাস উৎসব বিশেষ আকর্ষণ। কৃষ্ণলীলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই তিথির মাহাত্ম্য। আবার এও কথিত আছে  এই পূর্ণিমায় উপবাস করা খুবই শুভ। এদিন উপবাস করলে শত অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান ফল পাওয়া যায়। এই দিনে সূর্যোদয়ের আগে স্নান খুবই পুণ্যের। ব্রহ্ম মুহূর্তে স্নান করলে জন্ম জন্মান্তর সেই পুণ্যের ফল মেলে।

এ বছর কার্তিক পূর্ণিমা রবিবার ২৬ নভেম্বর ৩ টে ৫৩ মিনিটে শুরু হচ্ছে। ২৭ নভেম্বর দুপুর ২টো ৪৫ মিনিটে শেষ হবে। উদয়তিথি হওয়ার কারণে, উৎসব ২৭ নভেম্বর পালিত হবে।