দেশ

সুপ্রিমকোর্টে আরজিকর কাণ্ডের ষষ্ঠ শুনানিতে পঞ্চম স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিলেন সলিসিটার জেনারেল

সুপ্রিমকোর্টে আরজি কর কাণ্ডের ষষ্ঠ শুনানি শেষ। দীপাবলির পর ফের মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট এদিন পঞ্চম স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিলেন সলিসিটার জেনারেল। রিপোর্ট পড়ছেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সিবিআই আরও কিছু জায়গা থেকে তথ্য পেয়েছে তা  উল্লেখ করা হয়েছে স্টেটাস রিপোর্টে। সিবিআই আধিকারিকরা নিহতের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই। প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেছেন, আর্থিক দুর্নীতি মামলার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা  উল্লেখ করেছে সিবিআই। সিবিআই চার্জশিটে সিভিক ভলান্টিয়ারক সঞ্জয় রাই ‘মূল অভিযুক্ত’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। চার্জশিটে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের নাম রয়েছে।  টাস্ক ফোর্স নিয়ে শীর্ষ আদালতে হলফনামা জমা পড়েছে। সলিসিটর জেনারেল এদিন জানান, ৭৮০০ হাসপাতাল ইতিমধ্যেই টাস্ক ফোর্স বিষয়ে তথ্য এবং প্রস্তাব দিয়েছে ।রাজ্য শীর্ষ আদালতে জানালো, আর জি করের কাজ আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। রাজ্যের মেডিক্যালগুলিতে সিসিটিভি বসানো, শৌচালয়, রেস্টরুম ইত্যাদি কাজ কত দূর এগিয়েছে,  সে সম্পর্কে তথ্য জমা দিয়েছে রাজ্য। সেখানে রাজ্য জানিয়েছে, এই কাজের জন্য হাজার হাজার কোটি বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক কাজ সম্পন্ন। আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘ইন্টিগ্রেটেড হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ১ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। সব হাসপাতালে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যকে।জুনিয়র চিকিৎসকেরা কাজে ফিরেছেন কিনা এদিন শুনানি চলাকালীন জানতে চান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। জুনিয়র চিকিৎসক পক্ষের আইনজীবী জানান, সাত জন যারা অনশন করছেন তারা ছাড়া বাকিরা সকলেই কাজে ফিরেছেন। প্রধান বিচারপতি এও বললেন, অভিযুক্ত একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। কীভাবে তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছিল?  উত্তরে আইনজীবী জানান, রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছিল। তবে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে হাই কোর্টে মামলা হয়েছে। করুণা নন্দী জানান, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় গার্হস্থ্য হিংসায় অভিযুক্ত। এর পরই সিভিক ভলান্টিয়ারের নিয়োগ নিয়ে একাধিক তথ্য তলব করলেন প্রধান বিচারপতি। কলকাতা এবং রাজ্যে কত সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে? জানতে চাইলেন প্রধান বিচারপতি। আইনজীবী করুণা নন্দী জানালেন, ১৫১৪।  তাঁদের যোগ্যতা কী?  কোন বৈধ আইনের ভিত্তিতে তাঁদের নিয়োগ করা হয়? কোথায় কোথায় নিযুক্ত রয়েছেন তাঁরা? দৈনিক নাকি মাসিক বেতন পান তাঁরা? জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যেকে হলফনামা দিতে হবে। সুুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, হাসপাতাল-থানা এবং অপরাধস্থলে সিভিক মোতায়েন করা যাবে না। এই নির্দেশ পূরণ করতে কী কী পদক্ষেপ করছে রাজ্য, তাও জানাতে হবে। সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে আপত্তি তুললেন সিনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী করুণা নন্দী। তাঁর দাবি, “যে সিভিক নিয়োগের বিরোধিতা আমরা করেছিলাম, রাজ্য তাদের নিয়োগ কার্যত দ্বিগুণ করে দিয়েছে। অথচ হাই কোর্ট এই নিয়োগ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।” পালটা রাজ্যের দাবি, ২০০৫ সালের নিয়ম মেনে দেশের সব হাসপাতালে নিয়োগ করা হয়। মহারাষ্ট্রে যে নিয়ম মেনে নিয়োগ হয় কলকাতাতেও একই নিয়মে নিয়োগ হয়। তবে সঞ্জয়কে ২০০৫-এর আইন মেনে নিয়োগ করা হয়নি। পুলিশের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়া আর কেউ জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখছে সিবিআই। চার্জশিটের কপি জমা দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। তখনই বিষয়টা জানান তাঁদের আইনজীবী তুষার মেহতা। সুপ্রিম শুনানিতে উঠে এল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কথা। আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংয়ের কথায়, ২০২২ সাল থেকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। ফলে রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডে থেকে আসা মানুষজন বিষয়গুলির মধ্যে  ঢুকে পড়ছে। যদিও বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত।