কলকাতা

প্রতিবাদ চলুক, পূর্ণ কর্মবিরতির পথ থেকে সরে আসুন জুনিয়র ডাক্তারেরা, পরামর্শ সিনিয়রদের

ক্ষোভ বাড়ছে আম জনতার। ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্টও। পরিস্থিতি যে ক্রমশ নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, সেটা বুঝেই এবার কর্মবিরতির পথে হাঁটা জুনিয়র ডাক্তারদের পূর্ণ কর্মবিরতির পথ থেকে সরে আসার পরামর্শ দিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। কার্যত আর জি কর কাণ্ডকে ঘিরে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে প্রথম থেকেই সমর্থন জানিয়ে আসছিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। অভিযোগ, যত না সমর্থন দিয়েছেন তার থেকেও বেশি উস্কে গিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এখন সেই সিনিয়র চিকিৎসকেরাও বুঝতে পারছেন, ক্ষোভ চড়ছে সর্বত্র। যে কোনও মুহুর্তে শীর্ষ আদালত থেকে বড়সড় আঘাত নেমে আসতে পারে। কেননা সুপ্রিম কোর্টকেও লক্ষ্য করে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ বার্তা দেওয়া হচ্ছে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের মঞ্চ থেকে যা শুধু আদালত অবমাননারই ঘটনা তাই নয়, কার্যত রাষ্ট্রদ্রোহীতার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে নানান মহলেও। তাই সিনিয়ররা এবার কার্যত নিজেদের পিঠ বাঁচাতে জুনিয়রদের পরামর্শ দিলেন পূর্ণ কর্মবিরতি থেকে সরে এসে আন্দোলন করার। এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনায় পূর্ণ কর্মবিরতির পথ থেকে সরে আসার পরামর্শ দেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। কর্মবিরতি তুলে নিয়ে যদি অন্য কোনও ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া যায়, সেই বিষয়টি বিবেচনা করার পরামর্শ দেন তাঁরা। যদিও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে কি না, সেটি পুরোপুরি জুনিয়র ডাক্তারদের সিদ্ধান্তের ওপরেই নির্ভর করছে। কর্মবিরতি যাতে অন্তত আংশিক প্রত্যাহার করা হয়, সেই পরামর্শও দিয়েছেন সিনিয়রদের কেউ কেউ। রোগীস্বার্থের কথা বিবেচনা করে যাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি কিছুটা শিথিল করেন, সেই প্রস্তাব দেন তাঁরা। সব দেখে অনেকের অভিমত, রোগী পরিষেবা যতটা সম্ভব সচল রাখার চেষ্টা করছেন সিনিয়রেরা। কিন্তু সরকারি হাসপাতালগুলিতে জুনিয়র ডাক্তারদের সাহায্য ছাড়া বিপুল রোগীর চাপ সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে সিনিয়র ডাক্তারদের। তাই নিজেদের অসুবিধার কথা ভেবেই এখন জুনিয়রদের পূর্ণ কর্মবিরতি তুলে নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। সেই পরামর্শও দিয়েছেন সিনিয়রদের কেউ কেউ। রোগীস্বার্থের কথা বিবেচনা করে যাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি কিছুটা শিথিল করেন, সেই প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। যদিও কর্মবিরতির পথে হাঁটা দেওয়া জুনিয়র চিকিৎসকদের নেতাদের দাবি, আন্দোলন কখনও বন্ধ হবে না। যত দিন পর্যন্ত না বিচার মিলছে, ততদিন তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ঘটনা হচ্ছে, প্রথম বারের কর্মবিরতির সময়ে হাসপাতালে রোগী পরিষেবায় জুনিয়র ডাক্তারদের অভাব অনেকাংশে পূরণ করেছিলেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। অতিরিক্ত সময় কাজ করে রোগী পরিষেবা সচল রাখার চেষ্টা চালিয়েছেন সিনিয়রেরা। এদিনের বৈঠকে সিনিয়র ডাক্তারের জানিয়েছেন, এখনও যদি জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি চালিয়ে যান, সে ক্ষেত্রে সিনিয়রেরা আগের মতোই পরিষেবা দিয়ে যাবেন। তবে সিনিয়রদের তরফে কোনও সিদ্ধান্ত জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না।