ব্রিগেডে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ সমাবেশের পরের দিনই নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল বা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তারপর নবান্নে মমতার পাশে দাঁড়িয়ে লালু পুত্র বলেছিলেন, ‘মমতা লড়া মানেই আমারা লড়া।’ তেজস্বী বলেছিলেন, ‘আমরা পূর্ণ শক্তি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করব। যেখানে আমাদের প্রয়োজন হবে সেখানেই ওঁর পাশে দাঁড়াবো। বিজেপি যতই চেষ্টা করুক না কেন, বাংলা অন্য জায়গা। এখানকার ভাষা, সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্র কে বাঁচাতে হবে’। লালু পুত্র এও বলেন, ‘বিহারের যেসব মানুষ বা আমি তাদের কাছেও আবেদন করবো যাতে তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করেন’। একই সুর শোনা গেল মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের অন্যতম শরিক দল শিবসেনার গলাতেও। বৃহস্পতিবার শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত একটা বিবৃতি জারি করে বলেছেন, ‘অনেকের মনেই প্রশ্ন ছিল পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে শিবসেনা লড়বে কিনা। দলের সভাপতি উদ্ধব ঠাকরেজির সঙ্গে কথা বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি শিবসেনা নির্বাচনে লড়বে না। তার বদলে তৃণমূলের পাশে থাকব আমরা।’ বাংলার এই নির্বাচনী যুদ্ধকে ‘দিদি বনাম সবার’ লড়াই বলে উল্লেখ করেছেন সঞ্জয়। তাঁর অভিযোগ, মমতা দিদির বিরুদ্ধে টাকা, পেশী শক্তি ও মিডিয়াকে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু মমতা বাংলার সত্যিকারের বাঘিনী। তাই তিনি ফের জয়যুক্ত হবেন বলেই শিবসেনার আশা। তিনি লিখেছেন, “বাংলার নির্বাচন নিয়ে বহু মানুষই কৌতূহলী। তাঁরা জানতে চাইছেন বাংলার ভোটের লড়াইয়ে সেনা প্রার্থী দিচ্ছে কিনা। উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে কথা বলার পর আমরা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি তা জানাচ্ছি। এবার ভোটে গোটা লড়াইটাই দিদির সঙ্গে অন্য সবার। এই অন্য সব গুলি শক্তির অদ্যাক্ষর M। M হল মানি, মাসল এবং মিডিয়া। এই প্রত্যেকটি শক্তির সঙ্গে লড়াই আরেক M অর্থাত্ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই পরিস্থিতিতে শিবসেনার সিদ্ধান্ত বাংলায় নির্বাচনের না লড়াই করার। বরং সর্বশক্তি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার আমরা তার সাফল্য কামনা করি এবং আমরা বিশ্বাস করি মমতাই আসল বাংলার বাঘিনী।” রাজনৈতিক মহলের ধারনা – মমতাকে সামনে রেখেই জোট বাঁধছে বিরোধীরা। সর্বতোভাবে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন অখিলেশ যাদব, লালুপুত্র তেজস্বী যাদবরা। এবার একই বার্তা এল মহারাষ্ট্র থেকে। সেক্ষেত্রে ২০২১ বঙ্গ নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হলে, জাতীয় রাজনীতিতেও নতুন সমীকরণ তৈরি হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকছে।